ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডিএনসিসির মার্কেটের অবৈধ দোকানদারদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মঙ্গলবার সকালে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজারের (কৃষি মার্কেট) ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুদানের চেক বিতরণ ও মার্কেট পুনর্নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
মেয়র বলেন, ‘আসল কথা হলো কাওরান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, রায়েরবাজার মার্কেটসহ ডিএনসিসির সব মার্কেটে বৈধ দোকানদারের পাশাপাশি অনেক অবৈধ দোকানদার রয়েছে। অবৈধ দোকানদাররাই নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ হোক এটা চান না। আমি ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের ও কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছি অবৈধ দোকানদারদের তালিকা তৈরি করতে। অবৈধ দোকানদারদের তালিকা করে দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৈধ দোকানদাররা কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণে আপত্তি করবে না।’
তিনি বলেন, ‘কাওরানবাজারসহ কয়েকটি মার্কেটের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক মার্কেটের দেয়াল খসে পড়েছে। যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ব্যবসায়ীরা বলে দুর্ঘটনা ঘটে আমরা মারা যাবো তাও আমরা মার্কেট ছাড়বো না। এটা কোন কথা হলো না। তাহলে ক্রেতাদের ক্ষতি হলে সে দায় কে নেবে। স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নত স্মার্ট মার্কেট প্রয়োজন। এই ধরনের জরাজীর্ণ মার্কেট স্মার্ট বাংলাদেশে থাকতে পারে না। আমরা চাই এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো ভেঙে আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করে দিব। নতুন মার্কেট ভবন নির্মাণ মানে বরাদ্দ প্রাপ্ত দোকানদারদের দোকান নিয়ে নেয়া না, বরং সুন্দর দোকান পাবেন।’
মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি মার্কেটে অগ্নি নির্বাপক সিস্টেমসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। মার্কেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতিকে আহবান করছি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করতে হবে। কৃষি মার্কেটের কাজ আজ থেকে শুরু হচ্ছে। ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছি এটির কাজ যেন টেকসই হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, 'মোহাম্মদপুর এলাকায় দুই বাড়ির মাঝখানে খালি জায়গায় যেখানে ময়লা ফেলা হতো সেটিকে বলা হতো মেথর প্যাসেজ। দুই বাড়ির মাঝখানে খালি জায়গা আমরা ঢালাই করে সুন্দর করে দিয়েছি৷ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মেথর প্যাসেজ নামটি পরিবর্তন করে এটির নাম দিয়েছি সার্ভিস প্যাসেজ। দয়া করে কেউ ময়লা ফেলে এটি নোংরা করবেন না।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের সেবায় দিন রাত পরিশ্রম করেন। সেই নেত্রীর কর্মী হিসেবে আমরা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়নি। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ করা হবে। অনেকে বলেছে এখানে অনেক বড় ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে সময় লাগবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা চিন্তিত। তাদের জীবন জীবিকার কি হবে। আমি মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ জানিয়েছি দ্রুত সময়ে মার্কেটটি আগের মতো নির্মাণ করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করার জন্য। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ধন্যবাদ মেয়র মহোদয়কে।’
বক্তব্য শেষে ডিএনসিসি মেয়র ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন এবং চেক বিতরণ শেষে নির্মাণ নাম ফলক উন্মোচন করে নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, ক্ষতিগ্রস্ত মোট ৪১২ জন ব্যবসায়ীর প্রত্যেককে অনুদান হিসেবে ডিএনসিসি থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।