গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সোনারায় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলামকে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার মামলায় ওই ইউনিয়নের যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সামিউল ইসলাম সামুসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রাণ হারানো ৩৮ বছর বয়সী জাহিদুল ইসলাম উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি। তিনি পশ্চিম বৈদ্যনাথ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন সোনারায় ইউনিয়নের পশ্চিম বৈদ্যনাথ গ্রামের ৪১ বছর বয়সী সামিউল ইসলাম সামু। ওই ইউনিয়নের যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। অপরজন পূর্ব রামজীবন গ্রামের ৬০ বছর বয়সী আনোয়ার হোসেন। তিনি জামায়াতের সদস্য।
সোমবার রাতে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে নিউজবাংলাকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে, রোববার রাত ১১টার দিকে জাহিদুল ইসলাম ও রাকিব মিয়া মোটরসাইকেলে বামনডাঙ্গা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। ফেরার পথে তারা উপজেলার শাখা মারা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের পথরোধ করে। পরে দুর্বৃত্তরা জাহিদুল ইসলামকে এলোপাতাড়িভাবে ছুরিকাঘাত করার একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। ওই সময় সঙ্গে থাকা রাকিবও আহত হন।
ওই সময় জাহিদুল ইসলাম ও রাকিবের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। সেখানে রাকিবের চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু জাহিদুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা। পরে রাত তিনটার দিকে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর ওই রাতেই পূর্ব শিবরাম গ্রামের ৩০ বছর বয়সী মিজানুর রহমান, ২৫ বছর বয়সী মোশাররফ হোসেন, মধ্য শিবরাম গ্রামের ৬৪ বছর বয়সী আবদুস সাত্তার মিয়া ও ৩৫ বছর বয়সী এছমোতারা বেগমকে আটক করে পুলিশ।
ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত থাকার তথ্য মেলায় তাদের আটক করা হয়েছে।
ঘটনার পরদিন (সোমবার) সকালে নিহতের বড় বোন আঞ্জুমান আরা বেগম বাদী হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘আসামি সামিউল ইসলাম ছামু ও আনোয়ার এই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তাদের সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত জাহিদুলকে হাসপাতালে এবং রংপুর নেয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে ঘটনার জড়িত এই দুই আসামির নাম বলেছিলেন। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘ঘটনার পর এবং মামলা হওয়ার আগে নারীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’