বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের দিন থেকে এ সোমবার পর্যন্ত হরতাল ও কয়েক দফার অবরোধের সময়ে ১৫৪ টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক ১৫৪টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে ঢাকা সিটিতে আগুন দেয়া গাড়ির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আর জেলা হিসেবে গাজীপুর সবচেয়ে বেশি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে।
একমাত্র সিলেট বিভাগের কোনো জেলাতে একটিও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। এ সময়ের মধ্যে ২৫টি জেলায় গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে, ৩৯ জেলায় ঘটেনি।
ফায়ার সার্ভিসের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, দিনে থেকে রাতে আগুন দেয়া হয়েছে বেশি। ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে ৬১টি ও রাতে ৯৩টি অগ্নিকাণ্ডে হয়। গড়ের হিসেবে দিনে ৫টি করে গাড়ি পুড়ানো হয়েছে।
সারাদেশে গাড়িতে দেয়া আগুনে এখন পর্যন্ত সাধারণ ৩ জন ও ফায়ার সার্ভিসের ২ জন মিলিয়ে মোট ৫ জন আহত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের দিনে রাজধানীর শাহজাহানপুরে আগুন নেভাতে গিয়ে দুইজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী মারধরের শিকার হয়েছেন এবং ফায়ার সার্ভিসের ১টি পানিবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলেও এ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মহাসমাবেশের দিন অর্থ্যাৎ ২৮ অক্টোবর সবচেয়ে বেশি ২৯ টি ও এরপর দিন ১৯ টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ৩ তারিখে কোনো গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি।
বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি ও ১৩ নভেম্বর ৭টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মহাসমাবেশের দিন থেকে এ ১৭ দিনের অগ্নিকাণ্ডে মোট ৯৪টি বাস, ৩টি মাইক্রোবাস, ২টি প্রাইভেটকার, ৮টি মোটরসাইকেল, ১৩টি ট্রাক, ৮টি কাভার্ড ভ্যান, ১টি অ্যাম্বুলেন্স, ২টি পিকআপ, ২টি সিএনজি, ১টি নছিমন, ১টি লেগুনা, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী ১টি গাড়ি, পুলিশের ১টি গাড়ি, ৫টি বিএনপির অফিস, ১টি আওয়ামী লীগ অফিস, ১টি পুলিশ বক্স, ১টি কাউন্সিলর অফিস, ২টি বিদ্যুৎ অফিস, ১টি বাস কাউন্টার ও ২টি শোরুম পুড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৮২টি, ঢাকা বিভাগে ৩৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি, বরিশাল বিভাগে ৬টি, রংপুর বিভাগে ৬টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১টি আগুন দেয়া ঘটনা ঘটেছে।
জেলা হিসেবে গাজীপুরে ১৫টি, চট্টগ্রামে ৮টি, নারায়ণগঞ্জ ৬টি, বগুড়া ৫টি, মানিকগঞ্জ ৪টি, ফরিদপুর ৪টি, লালমনিরহাট ৪টি করে অগ্নিকাণ্ড হয়।