বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে প্রবেশ করে ছাত্রদের এক পক্ষ অপর পক্ষকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে।
বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নে দুর্গাপুর এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর আহত শিক্ষার্থীরা গাছ ফেলে এক ঘণ্টা বরিশাল-ভোলা সড়ক অবরোধ করে।
হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের দাবি, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সমর্থনে মিছিলে অংশ না নেয়ায় হামলা করা হয়েছে।
অপর পক্ষের দাবি, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে হামলার চেষ্টাকালে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে।
হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন ২২ বছর বয়সী সিফাত হাসান, ২২ বছর বয়সী আশিকুজ্জামান সজীব ও আতিক শাহরিয়া। আহত তিনজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আতিক শাহরিয়া বলেন, ‘বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভোকেশনাল ও পলিটেকনিকের কোটা বাতিলের দাবিতে গত বুধবার থেকে তারা আন্দোলন করছেন। সোমবার কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করতে এসেছিল পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। তার আগমন উপলক্ষে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত রেখে মিছিলে অংশ নিতে বলে কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা সাকিব ভূঁইয়া।’
শাহরিয়ারের ভাষ্য, তারা অংশ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন সাকিব। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিকেলে তর্ক-বির্তক হয়। তখন তাদের ওপর হামলারও চেষ্টা করা হয়। তখন নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কলেজ অধ্যক্ষের কাছে বিচার দেয়া হয়।
শাহরিয়ার বলেন, ‘সাকিব ভূঁইয়ার নেতৃত্বে কলেজের ১০ থেকে ১২ শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত ২০ থেকে ২৫ জন রামদা, স্ট্যাম্প ও লাঠিসোটা নিয়ে রাত আটটার দিকে ছাত্রাবাসে হামলা করে। তারা অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে।’
শাহরিয়ারের ভাষ্য, তার শরীরে ১৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে। সিফাত ও সজিবও গুরুতর আহত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
সাকিব ভূঁইয়া বলেন, ‘কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল হতে দিতে চায়নি বিএনপি জামায়াতের একটি পক্ষ। তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে ম্যুরাল ভাঙ্গার চেষ্টা করে। তখন প্রতিরোধ করলে মারামারি হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একজন দাবি করেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে মিছিলে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রদের ওই পক্ষ না গিয়ে গালি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে হামলা করা হয়েছে।
চাঁদপুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এইচএম জাহিদ বলেন, ‘বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্রদের এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা করেছে। এ ঘটনার বরিশাল-ভোলা সড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল। এক ঘন্টা পর পুলিশে এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেছে।’
বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. খলিল উদ্দিন বলেন, ‘কলেজে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। কারা চালিয়েছে আমি জানি না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, ‘কলেজে দুইটি গ্রুপ রয়েছে। এক গ্রুপ হলে এসে অপর গ্রুপের ওপর হামলা করেছে। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। তাদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে। হামলার কারণ কলেজ কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’