বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আহত সাংবাদিক

  • প্রতিনিধি, কুমিল্লা   
  • ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ২২:৩৬

আহত সংবাদকর্মী বলেন, “তুই কেন সাইনবোর্ডের ছবি তুলচ?- বলেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে ক্যামেরা টান দেন তিনি। এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে হাসপাতালের কর্মীদের জড়ো করে ‘ওরে ধর’ বলে নির্দেশ দেন। পরে আমার হাত থেকে জোর করে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে যান।”

কুমিল্লা সর্দি-কাশি নিয়ে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করার ১২ দিন পর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, চিকিৎসকের ভুলে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার জানতে পেরে ওই হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আহত হয়েছেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদকর্মী।

শনিবার বিকেল ৫টার দিকে কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজ এলাকার হলি কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

প্রাণ হারানো শিশুটি কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের বাড়াইপুর গ্রামের মো. সোলেমানের ছেলে মো. হোসাইন।

সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ধস্তাধস্তির শিকার হন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদকর্মী। ধস্তাধস্তিতে আহত হলে বিপ্লব হোসেন নামের ওই সংবাদকর্মীকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তার সহকর্মীরা। শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে থাকা ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোরশেদুল আলমের বিরুদ্ধে।

নিহত শিশুর বাবা সোলেমান বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে আমার ছেলেকে হলি কেয়ার হাসপাতালে আনি। তখন ডা. আব্দুল কাইয়ুমের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১০ নভেম্বর ওই শিশুকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউতে) নেয়া হয়। এর আগে তার ইকো বা হার্টের কোনো পরীক্ষা করেননি চিকিৎসকরা। পরে ওইদিনই তারা আমাদের হঠাৎ করে জানালেন, আমার সন্তানের হার্টের চার ভাগের তিন ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক যদি আমাদের প্রথম দিনই বলতেন যে আমার সন্তানের হার্টের সমস্যা, তাহলে আগেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতাম বা অন্য কোথাও চিকিৎসার জন্য নিতাম। কিন্তু তারা আমাদের কিছুই জানাননি। আমার সন্তানের হার্টের সমস্যা বোঝার জন্য কোনো পরীক্ষাও করাননি। তাই আমি চিকিৎসক ছাড়া আর কাকে দোষারোপ করব? আমরা এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

নিহত শিশুটির মা শিমা আক্তার বলেন, ‘ডাক্তার যা বলছে আমরা তাই করেছি। কিন্তু ডাক্তার আমাদের সন্তানকে সময়মতো চিকিৎসা দেননি। আমরা জানতাম সর্দি-কাশি। অথচ দুইদিন আগে শুনলাম হার্টের সমস্যা। এ ঘটনার ন্যায়বিচার চাই আমরা।’

এ বিষয়ে আহত ক্যামেরা পার্সন বিপ্লব বলেন, “শিশু মৃত্যুর অভিযোগ পেয়ে আমরা হাসপাতালে যাই। আমার সঙ্গে যমুনা টেলিভিশন ও সময় টেলিভিশনের অন্য সহকর্মীরা ছিল। পরিচালকের বক্তব্য নিয়ে আমরা (হাসপাতাল থেকে) নামছিলাম। বাইরে বেরিয়ে হাসপাতালের সাইনবোর্ডের ফুটেজ নেয়ার সময় ডাক্তার মোর্শেদুল আলম এসে আমাকে ধাক্কা দেন।

“তুই কেন সাইনবোর্ডের ছবি তুলচ?- বলেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে ক্যামেরা টান দেন তিনি। এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে হাসপাতালের কর্মীদের জড়ো করে ‘ওরে ধর’ বলে নির্দেশ দেন। পরে আমার হাত থেকে জোর করে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে যান।”

সংবাদিকর্মী আহত হওয়ায় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি লুৎফর রহমান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক কাইয়ুমকে খুঁজে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোরশেদুল আলম ক্যামেরা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি সাংবাদিককে নিচে নেমে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলেছি। তারা দেখা না করায় আমি ক্ষুব্ধ হয়েছি। আর রোগীর অভিযোগ থাকলে থানায় অভিযোগ করতে বলেন।’

এ বিষয়ে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, ‘হলি কেয়ার হাসপাতালের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর