বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে জাবিতে সংহতি সমাবেশ

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:২২

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১৪ শ’ ৪৫ কোটির যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, সেই অর্থই অনর্থের মূল হয়ে দাঁড়িয়েছে। টাকা পেয়ে প্রশাসন খরচ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছে। পরকল্পনা ছাড়া যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করছে। গাছ কেটে উজাড় করছে। যেখানে বরাদ্দ দেয়া দরকার, সেখানে না দিয়ে অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ খরচের প্রবণতা প্রশাসনকে বন্ধ করতে হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বনভূমি উজাড় করে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ না করে অংশীজনদের মতামত নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে সংহতি সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’ ব্যানারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে জাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে শুনে আসছি, একটি মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তিদের থেকে শুনে আসছি, এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিভাগে ক্লাস করার জন্য ও শিক্ষকদের বসার জায়গার অভাব রয়েছে। এই সমস্যাগুলো সমাধান না করে প্রশাসন একের পর এক নতুন বিভাগ খুলছে; অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, লেকের পাড়ে, রাস্তার পাশে নতুন কলা ভবন নির্মাণ করার ফলে রাস্তার পাশে গাড়ির শব্দে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। জহির রায়হান মিলনায়তনের ভেতরে গরমে বসা যায় না। এইভাবে নির্মাণ কাজ করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় কারা, তার জবাব পাওয়া যায় না।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম সঙ্কট নিরসনে ভবন নির্মাণের জন্য মাস্টারপ্ল্যান করা দরকার। যেভাবে নির্মাণ করলে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হবে না, কারও ক্ষতি হবে না- সেভাবেই পরিকল্পনা করা দরকার। পুরাতন অব্যবহৃত ভবনগুলো ফেলে না রেখে সেগুলো বহুতল ভবনে রূপ দিয়ে চাহিদা মেটানো যেত। আমরা জানাতে চাই, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো সমাধান করা হোক।’

উন্নয়ন অর্থনীতি গবেষক মাহা মির্জা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো মনে করছে, ক্যাম্পাসে অনেক বেশি বনভূমি রয়েছে। এর থেকে কিছু গাছ কেটে ভবন নির্মাণ করলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু আমরা জানি, বাংলাদেশের মোট আয়তনের তুলনায় বনভূমি অনেকটাই কম। এজন্য আমাদের দেশের যে প্রান্তেই বনভূমি রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি। কারণ আমরা গেল গ্রীষ্মের মৌসুমে দেখেছি, পরিবেশের তাপমাত্রা রেকর্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য প্রশাসনের উচিত প্রকৃতি ধ্বংস না করে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১৪ শ’ ৪৫ কোটির যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, সেই অর্থই অনর্থের মূল হয়ে দাঁড়িয়েছে। টাকা পেয়ে প্রশাসন খরচ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছে। পরকল্পনা ছাড়া যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করছে। গাছ কেটে উজাড় করছে। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন লেকচার থিয়েটারে প্রতিটি কক্ষে ১০০ জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৬২ টি কক্ষ তৈরি হচ্ছে। তাহলে নতুন ভবন তৈরি করার প্রয়োজন কোথায়? যেখানে বরাদ্দ দেয়া দরকার, সেখানে না দিয়ে অপ্রয়োজনীয় খাতে অর্থ খরচের প্রবণতা প্রশাসনকে বন্ধ করতে হবে।’

সংহতি সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জোবাঈদা মৌটুসী ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি দে তাপসীর সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসী বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবীর, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর শিক্ষক অলিউর রহমান সান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রফিকুজ্জামান ফরিদ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি মুশফিক উস সালেহীন, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক সাদিকুল ইসলাম সোহেল, পরিবেশ উপ-পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক পারভীন ইসলাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মেহের বিশ্বাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতা মাহাথির মোহাম্মদ, সাভার উপজেলা সরকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী, পরিবেশ বিষয়ক উপ-পরিষদের সদস্য সৈয়দ রত্না প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর