রাজধানী ঢাকায় বিএনপির ডাকা ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ এবং পরবর্তী সময়ের হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মহানগর, দক্ষিণ ও উত্তর জেলার বিভিন্ন থানায় ৫০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দলটির ৭শ’ নেতা-কর্মী।
বিএনপির পক্ষ থেকে শনিবার এমনটা দাবি করা হয়েছে।
দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. ইদ্রিছ জানান, নগরীর বিভিন্ন থানায় শুক্রবার পর্যন্ত বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ইকবাল চৌধুরীসহ এ পর্যন্ত ৩৪০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে সদরঘাট থানায় দায়ের করা মামলায় একই পরিবারের চার ভাইকে আসামি করা হয়েছে।
তাছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপির আরও ২০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ২০জনসহ চট্টগ্রামে মোট ৩৪০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন থানার মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, যুগ্ম আহ্বায়ক এস কে হুদা তোতন, মো. শাহ আলম, আহবায়ক কমিটির সদস্য আবুল হাশেম, মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দীপ্তিসহ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা হওয়া থানার মধ্যে চান্দগাঁও থানায় ১টি, পাঁচলাইশ থানায় ১টি, বায়েজিদ থানায় ৩টি, আকবর শাহ থানায় ২টি, খুলশী থানায় ৩টি, পাহাড়তলী থানায় ১টি, ইপিজেড থানায় ১টি, কোতোয়ালী থানায় ১টি, হালিশহর থানায় ১টি, পতেঙ্গা থানায় ১টি ও সদরঘাট থানায় ১টিসহ মোট ১৬টি মামলা হয়েছে।
তাছাড়া চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় শুক্রবার রাতে হাটহাজারী থানায় দায়ের করা মামলাসহ মোট মামলা হয়েছে ১৯টি। গ্রেপ্তার হয়েছে ২১০ জনেরও বেশি। দক্ষিণ জেলায় ১৩টি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে প্রায় ১৮০ জন নেতা-কর্মী।
নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের গণগ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘চট্টগ্রামে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-সমাবেশের মধ্য দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। বিন্দুমাত্র বল প্রয়োগ না করেই ধৈর্য্যের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচি সফল করছেন।
‘জনগণ বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে দেখে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা আগের কায়দায় তাদের পেটোয়া বাহিনী পুলিশকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভুয়া, গায়েবি অভিযোগ তুলে পুলিশের সদস্যরা এখন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিরাতে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে, পরিবারের সদস্যদের অকথ্য নির্যাতন করছে।
‘পুলিশের কারণে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এখন ঘরে থাকতে পারছে না। পেলেই গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন গায়েবি মামলার আসামি করে দিচ্ছে। সক্রিয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিএনপির সমর্থকরা পর্যন্ত তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।’