বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ: অর্থনীতির নতুন হাতছানি

  • রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম   
  • ১০ নভেম্বর, ২০২৩ ২৩:১৪

পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্র সৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এ স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবে।

এক সময় মানুষ স্বপ্ন দেখত- ট্রেনে করে কক্সবাজার যাবে, ঘুরবে, আনন্দ করবে। সেই স্বপ্ন আর স্বপ্ন রইল না; বাস্তবে রূপ নিল। সত্যি সত্যি দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ হয়ে গেল; ট্রেনও চলল।

শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথের উদ্বোধন করবেন। এতে করে খুলবে পর্যটনের নতুন দ্বার। পাশাপাশি অর্থনীতি হাতছানি দেবে; কমবে দুরত্ব।

জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথের দূরত্ব দেড় শ’ কিলোমিটার। সড়কপথে বাসে যেতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। আর এ মহাসড়কে যানজটে পড়লে ছয়-সাত ঘণ্টাও লেগে যায়। এ রেলপথ চালু হলে ছয়-সাত ঘণ্টার এ দূরত্ব নেমে আসবে অর্ধেকে; কমবে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসার পাশাপাশি সুযোগ সৃষ্টি হবে বহুমাত্রিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের।

দেশের পর্যটনের খাতকে অনেক এগিয়ে নেবে এ রেলপথ। আগে দূরত্ব, যানজট ও দুর্ঘটনার ভয়ে অনেকে কক্সবাজার যেতে চাইতেন না। ট্রেন চালু হলে এখন তারাও ঘুরে আসবেন কক্সবাজার থেকে। সকালে গিয়ে রাতে বা পরদিন ফিরে আসবেন অনেক পর্যটক। তাতে খরচও হবে কম।

পর্যটনের পাশাপাশি রেলের সুফল পাবে কক্সবাজারের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের আরও কয়েকটি খাতে। সেসব খাতের মধ্যে রয়েছে- লবণ, কৃষিপণ্য, মৎস্য ও শুঁটকি। এসব পণ্য কম খরচে আনা-নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কৃষিপণ্য সহজে আনা-নেয়ার সুবিধা থাকলে কৃষকেরও দাম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও কিছুটা গতি আনতে পারে নতুন এ রেলপথ।

এ ছাড়া বিনিয়োগ বাড়বে পর্যটন, কৃষি ও চিংড়ি শিল্পে। ফলে গতি পাবে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা।

এসব কারণে আনন্দে উচ্ছ্বসিত কক্সবাজারের মানুষ। সৈকত পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারিত হওয়ায় জেলায় উৎপাদিত পণ্য কম মূল্যে যেমন পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে, তেমনি পর্যটক আগমনও বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।

তবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

কক্সবাজারে নির্মিত আইকনিক রেল স্টেশনটি দেখতেও যাবেন অনেকে। ব্যতিক্রমী, অসাধারণ সৌন্দর্যমণ্ডিত এ স্টেশনটি। কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে আইকনিক রেলস্টেশন। ঝিনুকের আদলে তৈরি দৃষ্টিনন্দন এ স্টেশন ভবনটির আয়তন ১ লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয়তলা ভবনটির কাজ প্রায় শেষ। ঝিনুকের আদলে তৈরি স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্র সৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এ স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবে।

প্রকল্প পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘এ স্টেশনটি অত্যাধুনিক একটি স্টেশন। পুরোটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এতে রয়েছে পর্যটকের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা। থাকছে আধুনিক ট্রাফিক সুবিধা। স্টেশনের নিচতলায় থাকছে টিকিট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র। দ্বিতীয় তলায় শপিংমল ও রেস্তোরাঁ। তৃতীয় তলায় থাকবে তারকা মানের হোটেল। থাকছে মসজিদ, শিশু যত্ন কেন্দ্র, এটিএম বুথ, পোস্ট অফিস, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথসহ নানা সেবাকেন্দ্র।’

মোট ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। বাকি ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে ৯টি রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট।

এ বিভাগের আরো খবর