মাদারীপুরে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে আছাড় মেরে মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
জেলার চরমুগরিয়া এলাকার জামিয়া কাসেমিয়া রওতুল উলুম ক্যারেট কেয়ার মাদ্রাসায় সোমবার এ ঘটনা ঘটে, তবে বিষয়টি বৃহস্পতিবার সকালে জানাজানি হয়।
আট বছর বয়সী ফায়েজ হাওলাদার মাদারীপুর সদর উপজেলার নয়াচর গ্রামের সবুজ হাওলাদারের ছেলে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষক মাহাদী হাসান চরমুগরিয়া এলাকার জামিয়া কাসেমিয়া রওতুল উলুম ক্যারেট কেয়ার মাদ্রাসার নূরানী শিক্ষক। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক আছেন।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার ভোরে ওই মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের ছাত্র ফায়েজকে ঘুম থেকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নেন শিক্ষক মাহাদী হাসান। ওই সময় ফায়েজকে শ্রেণিকক্ষে উঠে দাঁড়াতে বলেন তিনি। শিক্ষকের কথা মতো না দাঁড়িয়ে, শ্রেণিকক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে শিশুটি।
একপর্যায়ে শিক্ষক মাহাদী হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে ফায়েজকে গলা ধরে তুলে একটি আছাড় দেন। এতে সে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পায়। বিষয়টি কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকিও দেন ওই শিক্ষক। পরদিন মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ফায়েজকে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। পরে স্বজনদের জানানো হয়।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে ফায়েজের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না সে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিশুটির মা শ্যামলী আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে আলেম বানানোর জন্য আমি মাদ্রাসায় পড়াতে দিয়েছি, কিন্তু মাদ্রাসার হুজুর আমার ছেলেকে ভালো শিক্ষা না দিয়ে নির্যাতন করেছে। আমি ওই মাদ্রাসা বন্ধসহ ওই হুজুরের বিচার চাই।’
শিশুটির চাচা মিলন হাওলাদার বলেন, ‘আগে জানতাম না ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করে, কিন্তু এখন শুনতেছি শুধু আমার ভাতিজাকেই নির্যাতন করেনি। এর আগেও অনেকে শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে।
‘আমি শিক্ষক মাহাদী হাসানের কঠোর শাস্তি চাই। আমরা এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছি।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইমরুল কায়েস বলেন, ‘এ ঘটনার জন্য আমরা এরই মধ্যে এলাকার মরুব্বিদের জানিয়েছি। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা তা মেনে নেব। প্রয়োজনে ওই শিক্ষার্থীর সব চিকিৎসার খরচ আমরা বহন করব।’
মাদারীপুরের এসপি মাসুদ আলম খান জানান, বিষয়টি এরই মধ্যে জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।