বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমার কোনো উদ্যোগই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নয়: ড. ইউনূস

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ১৯:০৮

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমার উদ্দেশ্য ছিল মালিকানামুক্ত থাকব। সে জন্য কোনো কিছুতেই আমি মালিক হইনি। আমি সেটাই ফলো করে যাচ্ছি। যেখানে আমি নিজেই মালিকানামুক্ত থাকতে চাই সেখানে আরেকজনের কাছ থেকে কেড়ে আনব কেন?’

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমি যেসব উদ্যোগ নিয়েছি কোনোটিই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নিইনি। সব ক্ষেত্রে আমি মালিকানামুক্ত থেকেছি। আর আমার আদর্শ কর্মসূচিতে কোনো ত্রুটি ছিল না। সেটা গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা অন্য বড় কোনো প্রতিষ্ঠান, যেটাই হোক না কেন।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃতীয় শ্রম আদালতে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার ‍তৃতীয় শ্রম আদালতে যান ড. ইউনূস। শ্রম ভবনের লিফট কয়েক মাস ধরে অচল থাকায় সিঁড়ি ভেঙে ছয় তলায় উঠতে হয় তাকে।

দুপুর ১টার দিকে শুনানি শুরু হয়। ড. ইউনূসকে বিচারক এজলাসের চেয়ারে বসার অনুমতি দেন। শুনানি শুরু হলে তিনি দাঁড়িয়ে যান। আদালতে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনে ২৮ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য জমা দেয়া হয়।

ড. ইউনূস ছাড়াও এ মামলার অপর তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। আদালতে তারাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে আসামিরা বলেন, ‘বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকসহ ৫০টির অধিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান ড. ইউনূস গড়ে তুলেছেন। কোনো কোম্পানিতে তার নিজস্ব কোনো শেয়ার নেই। সুতরাং কোনো লভ্যাংশ বা লাভের টাকা তার পকেটে যায় না।

‘যখনই দেশের গরিবদের একটা সামাজিক সমস্যা দেখেছেন, সেটার মাধ্যমেই একটা বিজনেস মডেল বানিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীণ কল্যাণ।

‘তিনি এমন ব্যবসার ধারণা বা মডেল তৈরির জন্য যথেষ্ট সময় দেন, কিন্তু মালিকানায় কখনও নিজেকে জড়াননি। দেশ-বিদেশে কোথাও নিজের নামে কোনো জায়গা-জমি, গাড়ি-বাড়ি নেই তার।’

কোম্পানি আইনসহ বিভিন্ন আইনের ব্যাখ্যাসহ এই মামলাটি কেন চলতে পারে না, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয় বক্তব্যে। সেখানে মামলার আসামিদের অব্যাহতি চাওয়া হয়।

শুনানিকালে এজলাসে কোনো কথা না বলেননি ড. ইউনূস। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে যা বলার সেটি লিখিতভাবেই বলেছি, যাতে সবাই দেখতে পারে। মানুষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে মুনাফা করার জন্য। আমরাও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে বড় করেছি। কিন্তু এসব কার্যক্রমকে আমরা সামাজিক ব্যবসা বলি। যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপকার হয়।

‘মূল বিষয়টি হলো, এসব ব্যবসায় যিনি বিনিয়োগ করছেন তিনি কোনো মুনাফা নেবেন না। কাজেই আমি হচ্ছি এই সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা। বিশ্বব্যাপী এটি আমি প্রচার করার চেষ্টা করেছি। এসব কার্যক্রমের ভেতরে আমার ব্যক্তিগতভাবে মুনাফা করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’

বাকিরাও কোনো ধরনের অপরাধ করেননি উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার সঙ্গে যারা আছেন তারাও মুনাফা অর্জনের জন্য দায়িত্ব পালন করেননি। মানুষের উপকার করাটাই আমাদের লক্ষ্য। কোনোটাতেই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবো এরকম কোনো উদ্দেশ্য আমাদের মধ্যে ছিল না। সুতরাং যেটার উদ্দেশ্য লাভবান হওয়া না সেটা আমি কার জন্য নেব, কাকে দেব?’

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আমার উদ্দেশ্য ছিল আমি মালিকানামুক্ত থাকব। সে জন্য কোনো কিছুতেই আমি মালিক হইনি। আমি সেটাই ফলো করে যাচ্ছি। যেখানে আমি নিজেই মালিকানামুক্ত থাকতে চাই সেখানে আমি আরেকজনের কাছ থেকে কেড়ে আনব কেন?’

প্রসঙ্গত, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার উল্লেখ করে শ্রম আইন ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর