বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১২ দিনে বিএনপির সাড়ে ৯ হাজার নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

  •    
  • ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ২১:৫৭

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮টি মামলায় ১৯৯২ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৯৬টি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত বিএনপির ১২ জন নেতা-কর্মী আন্দোলনে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৩১ জন।’

গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির আরও ৫১৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১২ দিনে দলটির ৯ হাজার ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করেছেন বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

বুধবার বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সাইয়েদ্যুল আলম বাবুল গ্রেপ্তার হন।

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮টি মামলায় ১৯৯২ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৯৬টি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত বিএনপির ১২ জন নেতা-কর্মী আন্দোলনে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৩১ জন।’

র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার আরও ৩৩

এদিকে র‍্যাব জানিয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা চলমাান অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে নাশকতা, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে র‌্যাবের অভিযানে অন্তত ৩৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এই নিয়ে গত ১২ দিনে র‌্যাবের অভিযানে দলটির ২৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

ঢাকায় গ্রেপ্তার ১৬৯৬

বিএনপি-জামায়াতের ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর সহিংসতার ঘটনায় ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১১ দিনে ঢাকায় বিএনপির এক হাজার ৬৯৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ১১ দিনে মামলা হয়েছে ১১৭টি।

বুধবার বিকালে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কে এন রায় নিয়তি।

তিনি জানান, রাজধানীতে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির ৬৯৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ২৯ অক্টোবর ২৫৬ জন, ৩০ অক্টোবর ১৫৮ জন, ৩১ অক্টোবর ১৪১ জন, ১ নভেম্বর ৯৬ জন, ২ নভেম্বর ৬০ জন, ৩ নভেম্বর ৫৮ জন, ৪ নভেম্বর ৩৭ জন, ৫ নভেম্বর ৫২ জন, ৬ নভেম্বর ৮২ এবং সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর দলটির ৬০ নেতা-কর্মী ডিএমপি সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ নিয়ে ১১ দিনে গ্রেপ্তারের সংখ্যা মোট এক হাজার ৬৯৬ জন।

তিনি আরও জানান, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত রমনা বিভাগে মামলা হয়েছে ১২টি, লালবাগে ৮টি, মতিঝিলে ৩৬টি, ওয়ারীতে ১৭টি, তেজগাঁওয়ে ৬টি, মিরপুরে ২১টি, গুলশানে ১৩টি এবং উত্তরা বিভাগে মামলা হয়েছে ৪টি।

‘গুলি সদৃশ বস্তু’ উদ্ধার

তৃতীয় দফা অবরোধ চলাকালে বুধবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী থানা এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১৬০০ রাউন্ড ‘গুলি সদৃশ বস্তু’ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, এগুলো ব্ল্যাঙ্ক ফায়ারের জন্য ব্যবহৃত গুলি বিশেষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (দারুস সালাম জোন) মফিজুর রহমান পলাশ বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে শাহ আলীর চিড়িয়াখানা রোডে সড়ক বিভাজকের ওপরে পরিত্যক্ত অবস্থায় কাগজের প্যাকেটের মধ্য রাখা ‘গুলি সদৃশ বস্তু’ জব্দ করা হয়। এসব ধাতব বস্তু শনাক্তে আদালতের নির্দেশনা সাপেক্ষে সিআইডির ব্যালেস্টিক শাখায় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।’

এদিকে ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, বিআরটিসি বাসে আগুনসহ পরবর্তীতে হরতাল ও কয়েক দফার অবরোধের সময় জ্বালাও-পোড়াওয়ের দায় স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতারা। ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ ধরনের নাশকতা করা ঠিক হয়নি বলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।

বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটা দাবি করেন ডিএমপির ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

হারুন বলেন, “প্রথমত, যে সকল কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের কাছে আছেন, তারা প্রথমে বলছিলেন যে, ‘নাশকতা আমাদের দলের লোকজন করে নাই। মনে হয় অন্য কেউ করেছে।’ এটা নিয়ে তারা সন্দিহান ছিলেন। তখন আমাদের কাছে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ, স্মার্ট টিমের করা ভিডিও তাদেরকে দেখানো হয়। আমরা বলেছি, ‘আপনারা স্টেজে ছিলেন, সমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন।’

“এছাড়া ভিডিওতে তারা দেখেছেন, সমাবেশের দিন মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় নেতারা কে কী ভূমিকা রেখেছেন। সুলতান সালাউদ্দিন কোথায় লাঠি নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, রবিউল ইসলাম নয়ন কোথায় আগুন লাগাচ্ছেন, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ মিন্টুর বাসা থেকে যে গান পাউডার আমরা পেয়েছি, মিন্টু যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে, সবকিছু দেখার পরে তারাও (কেন্দ্রীয় নেতা) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন এটা ঠিক হয় নাই।”

সমাবেশের দিন, হরতাল ও অবরোধে গাড়িতে আগুন আর ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির লালবাগ ও মতিঝিল বিভাগ।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ভূমিকা পালনকারী বেশ কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। অংশগ্রহণকারী অনেকের নাম পেয়েছি ৷ তাদের মধ্যে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাইদ হাসান মিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাসা থেকে ৮ কেজি গান পাউডার উদ্ধার করি। মিন্টু স্বীকার করেছে, বাশার এবং মাসুদকে দিয়ে তিনি এগুলো বানান। রবিউল ইসলাম নয়ন ও সুলতান সালাউদ্দিন যে সহায়তা করেছেন, তিনি সেটিও স্বীকার করেছেন।’

গ্রেপ্তার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা হাসান হাওলাদার প্রথমে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গুলতি নিয়ে পুলিশের ওপর মারবেল নিক্ষেপ করেন ও বিআরটিসি বাসে আগুন দেন। কবি নজরুল ইসলাম কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন জুয়েল নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশের ওপরে হামলা করেন। এসবের ভিডিও ফুটেজ আছে বলে দাবি করেন হারুন।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ হত্যা মামলায় যে দুজন ১৬৪ দ্বারা জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, ছাত্রদলের মুগদা থানার সাধারণ সম্পাদক রানা মিয়া পুলিশ হত্যায় অংশগ্রহণ করেছেন। তাকেও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। কামরুজ্জামান টুকু বাস পোড়ানোর কথা স্বীকার করেছেন। হৃদয় স্বীকার করেছেন যে, তিনি বাংলামোটর, মৌচাক ফ্লাইওভার, কাকরাইল মোড়ে শুধু আগুন লাগিয়েছেন। পেট্রোল বোমা ও ককটেল সরবরাহ করেছেন রবিউল ইসলাম নয়ন।

টুকুর নেতৃত্বে সহিংসতা: ডিবিপ্রধান

‘যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নেতৃত্বে ২৮ অক্টোবর ও তার পরবর্তী সহিংসতা চালানো হয়’ জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বিএনপির হরতাল সমাবেশে সবার নেতা হচ্ছেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তার নেতৃত্বেই গত ২৮ অক্টোর থেকে চলমান সময় পর্যন্ত যে ধরনের বাসে আগুন, ককটেল নিক্ষেপ, পেট্রোল বোমা বা পেট্রোল লাগিয়ে আগুন জ্বালানোর ঘটনা ঘটেছে।

‘এরা গত ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়, বিআরটিসি বাসে আগুন, পুলিশ হাসপাতালে আগুন, অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর, পুলিশ মার্ডার মামলার আসামিদের অনেকের নাম সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তাররা আরও অনেকের নাম বলেছেন। তাদের ছবি পেয়েছি, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’

হারুন বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ভূমিকা পালনকারী বেশ কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। অংশহণকারী অনেকের নাম পেয়েছি। তাদের ছবি পেয়েছি, তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর