গাজীপুরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করা পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
বুধবার সকালে কোনাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন ওই নারী, বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ২৪ বছর বয়সী আঞ্জুয়ারা খাতুন কোনাবাড়ি জরুন এলাকার ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেডে সেলাই মেশিন অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আঞ্জুয়ারা গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় জামাল উদ্দিন নামে আরও এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে ঢামেকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুইজন ঢাকা মেডিক্যালে এসেছিলেন। এদের মধ্যে আঞ্জুয়ারা খাতুন নামে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ জামাল উদ্দিনের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে কোনাবাড়ির জরুনসহ আশপাশের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে নামেন।
এ সময় স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস লিমিটেড, রিপন নিটওয়্যার লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস ও বেস্টঅল সোয়েটারসহ আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করতে থাকলে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, সকাল ৮টার দিকে কয়েক শ শ্রমিক জরুন মোড়ের সামনে একত্রিত হয়ে হাতে ইট এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে কাঠ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন দুজন। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, শ্রমিক নিহতের বিষয়টি আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আশেপাশের কোনো হাসপাতালে শ্রমিক মৃত্যুর তথ্য নেই। ঢাকা মেডিক্যালৈ খোঁজ নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।