মূল সড়কে পানি জমে আছে। কোথাও খানাখন্দে ভরা। এমন সড়কেই চলাচল করে পণ্যবাহী বাহন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কুমিল্লার সড়কের এমন দৃশ্য নতুন নয়। গত অর্ধ যুগ ধরেই বিসিকে উৎপাদিত পণ্য পরিবহনের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর এমন বেহাল দশা।
শুষ্ক মৌসুমে সড়কে পানি জমে থাকে। বর্ষাকালে হাটু সমান পানি থাকে। ডুবে যাওয়া বিসিক এলাকার প্রায় অধিকাংশ সড়কে ময়লা পানি মাড়িয়ে চলতে হয় কারখানার মালিক, কর্মচারী ও ক্রেতাদের।
বিসিক কুমিল্লার সূত্র অনুযায়ী, ১৯৬০-১৯৬১ সালে ৫৪ দশমিক ৩৫ একর এলাকায় স্থাপিত হয় বিসিক কুমিল্লা অঞ্চল। এতে মোট প্লট সংখ্যা ১৫৫টি। ৬টি প্লটের মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, আবাসিক ভবন ও ওয়াটার ট্যাংক। বাকি ১৪৯টি শিল্প প্লটে ১৪২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন আছে। সচল থাকা ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এখানে রয়েছে একাধিক স্টিল মিল, বেকারি, মুড়ি, জাল, আয়ুর্বেদিক পণ্য তৈরির কারখানা, আটা ও পাটজাত পণ্য তৈরির কারখানা। এ ছাড়া অ্যালুমিনিয়াম, সিলভার ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানাসহ আছে বেশ কয়েকটি টেক্সটাইল মিল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিসিকের দক্ষিণ অংশে ফাইনওয়ে কারখানার পাশের ড্রেনের কাজ করা হয়েছে। মাঝে সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে আছে। সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। মাঝের অংশ খালে রূপ নিয়েছে। সেই খালে জন্মেছে কচুরিপানা ও কচু গাছ। একটু এগোলে গোল্ডেন বিস্কুট ফ্যাক্টরি। তার পাশ দিয়ে পূর্ব দিকে যাওয়া সড়কের অর্ধেক ড্রেনের পানি ওঠে জলাবদ্ধ। সেখানেও সড়কের পাশে কচুরিপানা জন্মেছে। এদিকে ড্রেনগুলো কোনটি সরু, কোনটি ডোবায় পরিণত হয়েছে। এ দৃশ্য দেখা গেছে ময়নামতি প্রেসের পাশে। বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ ছাড়া বিসিক এলাকার প্রায় অধিকাংশ সড়ক ভাঙা।
বিসিক কুমিল্লার ভাঙা সড়কে জন্মেছে কচুরিপানা। ছবি: নিউজবাংলা
মডার্ন বেকারির স্বত্বাধিকারী মুজিবুল হক বলেন, ‘আমরা একটা ডোবার মধ্যে পড়ে আছি। এখানে বারো মাসই জলাবদ্ধতা থাকে। বৃষ্টি হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। কিছু এলাকায় আমরা নিজের টাকায় সড়কে মাটি ফেলেছি। সড়কগুলো উঁচু ও ড্রেন নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
বিসমিল্লাহ মুড়ি মিলের পরিচালক ইরফান হাসান বলেন, ‘জলাবদ্ধতা ও সড়কের দুরাবস্থা দীর্ঘদিনের। দক্ষিণ অংশের অবস্থা বেশি বেহাল। এ ছাড়া সড়কের অবস্থাও ভালো নয়। পরিবেশ ভালো হলে বিসিকে আরও বেশি ক্রেতা আসবে।’
বিসিক কুমিল্লার ডিজিএম এসএম আলমগীর কাদেরী বলেন, ‘পাশের বাড়ি-ঘরগুলো উঁচু হয়ে গেছে। সে নিরিখে বিসিক এলাকা নিচু। নগরীর ঠাকুরপাড়া, রানীর বাজার, অশোকতলা এলাকার পানি এদিকে প্রবেশ করে। তাই দ্রুত এই এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে যায়। ড্রেনের কিছু কাজ হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করতে পারব।’