যমুনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে ৬৩ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ। ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত মাছটি বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার ৬০০ টাকায়।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে রোববার রাতে ধরা পড়া মাছটি সোমবার দুপুরে বিক্রির জন্য উপজেলার সরদারপাড়া বাজারে নিয়ে আসেন জেলে বাদশা মিয়া।
বিশাল আকৃতির বাঘাইড় মাছটি একনজর দেখতে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। কিন্তু এতো বড় মাছের একক কোনো ক্রেতা না পাওয়ায় পরে কেটে কেজি দরে বিক্রি করা হয়।
জেলে বাদশা মিয়া বলেন, ‘রোববার রাতে যমুনা নদীতে ৬৩ কেজি ওজনের এই বাঘাইড় মাছটি আমার জালে ধরা পড়ে। মাছটি অনেক বড় হওয়ায় একক ক্রেতা পাইনি। পরে কেটে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই। প্রতি কেজি ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। মাছটি বিক্রি করে মোট ৭৫ হাজার ৬০০ টাকা পেয়েছি।’
মাছ কিনতে আসা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর সরদারপাড়া বাজারে এতো বড় মাছ উঠেছে। এমন বড় মাছ সবসময় বাজারে দেখা যায় না।
‘অনেক বড় হওয়ায় মাছটি এককভাবে কেউ কেনার আগ্রহ দেখাননি। পরে কেটে কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। আমিও ১২০০ টাকা দিয়ে এক কেজি কিনেছি। নদীর মাছ, তার ওপর এতো বড় বাঘাইড়! খেতে অনেক সুস্বাদু হয় বলেই কিনেছি।’
প্রসঙ্গত, মহাবিপন্ন প্রজাতির তালিকাভুক্ত হওয়ায় বাঘাইড় মাছ শিকার, বিপণন ও পরিবহন নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এটি বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ২ নং তফসিলভুক্ত একটি সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী। এই আইন অনুযায়ী- বাঘাইড় মাছ শিকার, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন কিংবা দখলে রাখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট ‘আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ’ (আইইউসিএন)-এর লাল তালিকায় রয়েছে ‘মহাবিপন্ন’ বাঘাইড়।
তারপরও যমুনা, পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারাসহ দেশের বিভিন্ন নদীতে মাঝেমধ্যেই বাঘাইড় মাছ শিকার এবং রীতিমতো মাইকিং করে বিকিকিনি চলে। আর ক্রেতাদেরর ব্যাপক আগ্রহের কারণে তা বিক্রিও হয় বেশ চড়া দামে।