বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে নিপীড়নের অভিযোগ করে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অক্সফ্যাম।
অসমতা দূরীকরণে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাটি সোমবার এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, তৈরি পোশাকশিল্প (আরএমজি) শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকায় উন্নীত করতে শ্রমিক, কর্মী ও ট্রেড ইউনিয়নের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ। পাশাপাশি শ্রমিকদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ কর্তৃক সহিংস নিপীড়ন শ্রমিকের প্রতি বৈষম্যকে তুলে ধরেছে, যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, শ্রমিকদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনা বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ কতটা বিরূপ সে বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ আছে, সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর অন্তর পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি হয়ে থাকে। তবে প্রায় প্রতিবারই নিজেদের দাবি আদায়ে শ্রমিকদের রাজপথে নামার ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা (৭২ মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন এবং সুস্পষ্ট শ্রম বৈষম্য) নির্ধারণের আগমুহূর্তেও পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়াও বিজিএমইএ আন্দোলনরত শ্রমিকদের দমিয়ে রাখতে ‘কাজ না করলে মজুরি নেই’ নিয়ম তৈরি করছে উল্লেখ করে অক্সফ্যাম জানায় এ নিয়ম নিন্দনীয়।
অক্সফ্যাম গ্লোবাল লিভিং ওয়েজ কোয়ালিশনের মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সহমত প্রকাশ করে।
এমন পরিস্থিতিতে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ চারটি দাবি জানিয়েছে
১. পোশাক শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে এবং ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা বাস্তবায়ন করতে হবে।
২. বর্তমান ন্যূনতম মজুরি (৮ হাজার টাকা), শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ৩৫%। মজুরি ৪৮ ঘণ্টা/প্রতি সপ্তাহে প্রদান করা উচিত এবং এর মাধ্যমে শ্রমিকের পুষ্টিকর খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, শিশু সন্তানের যত্ন, পরিবহন এবং সঞ্চয়সহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনগুলো মেটাতে পারতে হবে।
৩. শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং অধিকারভিত্তিক আন্দোলনের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।
৪. যেসব আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনে, তারা স্থানীয় শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর মজুরি বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে এবং তাদের এই ন্যায্য দাবি আদায়ে জোরালো সমর্থন জানাবে।