বিচারক মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে ‘অবমাননাকর বক্তব্যের’ দেয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান (হাবিব) আদালতে হাজির না হওয়ায় তার অবস্থান জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলায় রায় দেয়া বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে ‘অবমাননাকর বক্তব্যের’ দেয়ায় গত ১৫ অক্টোবর হাবিবকে তলব করে আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
আদালতের আদেশে সোমবার হাজির না হওয়ায় তিনি কোথায় আছেন অর্থাৎ তিনি কারাগারে নাকি বাইরে আছেন সেটি জানাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেয়া হয়।
একই সঙ্গে হাবিবুর রহমানের বক্তব্য অপসারণ হয়েছে কি না, আদালত বিটিআরসিকে এ নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান, বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
পরে আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, আদালত অবমাননার অভিযোগে হাবিবুর রহমান হাবিবকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়ার একটা নির্দেশনা ছিল। রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে- উচ্চ আদালতের এ আদেশের কপি তার স্ত্রী গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির হননি।
তিনি বলেন, এ কারণে আদালত হাবিবের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগামী ৮ নভেম্বর জানাতে বলেছে। ওইদিন পরবর্তী আদেশের জন্য তারিখ ঠিক করেছে আদালত। একই সঙ্গে বিটিআরসি জানিয়েছে, সেই আপত্তিকর বক্তব্য অপসারণ করা হয়েছে।
শুনানির এক পর্যায়ে আদালত বলেছে, হাবিবুর রহমানের অবস্থান কোথায় সেটা আগে জানি, ভেতরে থাকলে এক কথা আর বাইরে থাকলে আরেক কথা। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেয়।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর তৎকালীন বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। ২০১৯ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের হিসেবে নিয়োগ পান।
সম্প্রতি বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান সম্পর্কে হাবিবুর রহমানের দেয়া বক্তব্য ইউটিউবে রয়েছে। এ নিয়ে ঘটনা সুপ্রিম কোর্টের নজরে আসে। পরে বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। পরে লিখিত আকারে হাবিবুর রহমানের দেয়া বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
এক পর্যায়ে আদালতের রুল হয় এ ঘটনায়। আদালত অবমাননার অভিযোগে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে হাবিবুর রহমানকে ৬ নভেম্বর সশরীরে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।