বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মারধর

  • প্রতিনিধি, লালমনিরহাট    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২৩ ১১:০৩

প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ক্লাস চলায় নিয়োগ পরীক্ষাটি বিকেলে নেয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয় ছুটি হলে তারপর নিয়োগ পরীক্ষা হবে, তাই আমি আসরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে এলাকার সন্ত্রাসী নুর ইসলামসহ ২০ থেকে ২৫ জন পথরোধ করে আমাকে মারপিট করে লাঞ্ছিত করে।’

লালমনিরহাটে এক প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের অফিস সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী, চাকরি প্রার্থী ও তাদের লোকজনের বিরুদ্ধে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ে রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, মোশারফ হোসেন এলাকার চার থেকে পাঁচজন শিক্ষিত যুবককে চাকরি দেয়ার কথা বলে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা নেন। দীর্ঘ কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি আর চাকরি দেন না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে পত্রিকায় ‘ভুয়া’ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের সান্ত্বনা দেন ওই শিক্ষক।

পরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বলে পুনরায় অফিস সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

ওই পাঁচটি পদের বিপরীতে ৪০ জন প্রার্থী আবেদন করেন। সেই সব পদে রোববার নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা শুনে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের চারদিকে অবস্থান নিয়ে থাকে। যাতে করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে না পারেন।

স্থানীয়রা জানায়, এরই এক পর্যায়ে বিকেলে প্রধান শিক্ষক নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের দিকে রওনা হলে শিক্ষক নিয়োগ প্রত্যাশী খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুর ইসলামসহ এলাকাবাসী চাকরির জন্য দেয়া টাকা ফেরত চান। পরে প্রধান শিক্ষক টাকা দিতে না চাওয়ায় সেখানেই তাকে মারধর করা হয়।

এর কিছুক্ষণ পর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান ঘটনাস্থলে গেলে তার সামনেই আবারও প্রধান শিক্ষককে পেটানো হয়। পরে জেলা শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজিত এলাকাবাসী পরীক্ষার খাতাপত্র ছিড়ে ফেলেন।

অবস্থা বেগতিক দেখে পরে মতিয়ার রহমান লালমনিরহাট সদর থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রার্থীরা জানান, এই নিয়োগ পরীক্ষা গত অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ হওয়ার কথা থাকলেও সেদিন পরীক্ষা স্থগিত করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে বলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রার্থীদের জানিয়ে দেন। কিন্তু যাদের চাকরি দেয়া হবে শুধু তাদেরকে আজকের পরীক্ষার তারিখ জানিয়ে দিয়ে গোপনে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে পূর্বের আরও আবেদনকৃত ৪০ জন প্রার্থী ওই নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসেন।

কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে পাঁচজনকে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ নিয়েছেন তাদেরকে উত্তরপত্রসহ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিয়ে দেন এবং বিকেলে পুলিশের উপস্থিতিতে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।

এ বিষয়ে চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগ সভাপতি নুর ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার চাকরির জন্য প্রধান শিক্ষক মোশারফ স্যারকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছি। গত পাঁচ বছরেও তিনি আমার চাকরি নিশ্চিত করেন নাই।

‘কিন্তু পরে আমি জানতে পারি তারা গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেছেন। বিষয়টি জানতে পারলে এলাকাবাসী আজ (রোববার) ওই শিক্ষকের চড়াও হয় এবং টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। টাকা দিতে না পারায় একটু ধাক্কাধাক্কি হয়।’

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ক্লাস চলায় নিয়োগ পরীক্ষাটি বিকেলে নেয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয় ছুটি হলে তারপর নিয়োগ পরীক্ষা হবে, তাই আমি আসরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে এলাকার সন্ত্রাসী নুর ইসলামসহ ২০ থেকে ২৫ জন পথরোধ করে আমাকে মারপিট করে লাঞ্ছিত করে।

‘পরে বিদ্যালয়ের সভাপতি মতিয়ার রহমান গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি পুলিশ প্রশাসনের নিকট এই ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর