সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনা শুরু হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রে রোববার দুপুরে এই জরিপ কাজের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।
এই জরিপের ফলে প্রাপ্ত বাঘের সংখ্যা জানা যাবে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই।
বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের চাঁদপাই এবং শরনখোলা রেঞ্জে ৩০০টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৬০০ ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। পরে তা বিশ্লেষণ শেষে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা তুলে ধরা হবে। ‘বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের’ আওতায় বাঘ গণনার কাজে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাকি দুটি রেঞ্জ বাগেরহাটের পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে ইতোমধ্যে জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরের এপ্রিল মাসে এ জরিপ কাজ শেষ হবে।
সুন্দরবনে প্রথম বাঘ জরিপের কাজ শুরু হয় ২০১৩-১৪ সালে। সেই জরিপে ১০৬টি বাঘ সুন্দরবনে আছে বলে জানা যায়। ২০১৮ সালে সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি।
জরিপ কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে। তাই সুন্দরবন সুরক্ষা করে বাঘ সংরক্ষণ করতে হবে। বাঘ সংরক্ষণের জন্য যা যা করা দরকার আমরা করব, তবে এ ক্ষেত্রে বনরক্ষী, সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।’
বাঘ সংরক্ষণের জন্য সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে বসবাসকারীদেরকে বাঘের গুরুত্ব জানানোর কথাও বলেন তিনি।
বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মহসিন বলেন, ‘সুন্দরবনে বাঘের শিকার প্রাণী বাড়ছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪২ হাজার। তাই সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা তুলে ধরা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাঘ গণনার বৈশ্বিক যে পদ্ধতি সেটা হলো ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতি। এর মাধ্যমে বাঘের ঘনত্ব নির্ণয় করে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়। বাংলাদেশেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে ছয় হাজার বর্গ কিলোমিটারের চার হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘ গণনার কাজ চালানো হবে। ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের মুখমণ্ডল ও ডোরা কাটার ছাপ ওঠে আসবে। এটা জটিল একটা পরিসংখ্যান কাজ। এ কাজ করেই বাঘের সংখ্যা বের করা হবে।’