বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপির বিরুদ্ধে মামলায় ব্রিটিশ নাগরিক কারাগারে

  • প্রতিনিধি, কুমিল্লা   
  • ৪ নভেম্বর, ২০২৩ ২০:২৭

কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কে বলছে উনি ব্রিটিশ নাগরিক। উনি তো দেশেই থাকেন, দেশেই শিক্ষকতা করেন। আপনি যেহেতু জেনেছেন, আমার বিষয়টি জেনে এ বিষয়ে বলতে হবে।’

কুমিল্লায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় গ্রেপ্তারের পর এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিককে কারাগারে পাঠানা হয়েছে।

ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের ম্যানচেস্টার শহরের ডিউজবার্গ এলাকার বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী ইলিয়াস মুকিত বুধবার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

ওই ব্যক্তি জন্মসূত্র ব্রিটেনের নাগরিক হলেও তার বাবা কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা।

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ২৯ অক্টোবরের হরতালে শহরের চকবাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলায় আসামির তালিকায় ইলিয়াস মুকিতের নামও যুক্ত করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামি তালিকার সবশেষ ৩০ নম্বরে ইলিয়াস মুকিতের নাম রয়েছে।

ওই মামলার বাদী কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জীবন কৃষ্ণ মজুমদার। মামলার নথিতে স্বাক্ষর করেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ রকিবুল ইসলাম ও ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ।

পরিবারের দাবি, ইলিয়াস মুকিত বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

ইলিয়াস মুকিতের বোন জামাই আবদুল গফফার ওবায়েদ বলেন, ‘আমরা সম্পর্কে খালাতো ভাইও। উনি জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে উনি দেশে এসে বিয়ে করেন এবং বউকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাগজপত্র রেডি করছিলেন। তাই ব্রিটেনে ফিরে যেতে ওনার দেরি হচ্ছিলো। ২০২৭ সাল পর্যন্ত ওনার ভিসার মেয়াদ আছে। কিছুদিন পরই চলে যাওয়ার কথা ভাবিকে নিয়ে। উনি বাংলা কথাও ঠিকমতো বলতে পারেন না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে তার কােনো ধারণা নেই। যেদিন এ ঘটনা সেদিন উনি বাসায় ছিলেন। নিজের চুলকাটার নাপিতও বাসায় নিয়ে আসেন। কােনোদিন শপিং করতেও যান না। উনি বাইরে গেলে আরেকজন সঙ্গে যাওয়া লাগে। অথচ উনাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবার থানায় যােগাযােগ করেছে। পুলিশের অফিসার নাকি দুঃখপ্রকাশ করেছেন।’

তাকে মামলার আসামি করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক স্বজনের সঙ্গে সম্পত্তির ভাগ নিয়ে বিরোধ আছে। এ নিয়ে তাকে আসামি করা হয়ে থাকতে পারে।’

এ বিষয়ে মামলার বাদী এসআই জীবন কৃষ্ণ মজুমদার বলেন, ‘অনেক সিনিয়র অফিসারের উপস্থিতিতে এটা করা হয়েছে। আমি তাে ক্ষুদ্র একজন অফিসার। উনি ঘটনাস্থলে ছিলেন, তাই নাম লেখা হয়েছে। উনি কাের্টে জবাব দেবেন।

‘মামলার ৭ নম্বর আসামি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘৩০ নম্বর আসামি ইলিয়াস মুকিত বিএনপির কেউ নন, আমরা তাকে চিনি না।’

এ বিষয় ইলিয়াস মুকিতের আইনজীবী আনােয়ার হােসেন বলেন, ‘গত ২৯ অক্টাবরের ঘটনার পরদিন আমার মক্কেল ইলিয়াস মুকিতকে পুলিশ তার বর্তমান বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছে কােনো হামলার প্রমাণ বা ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রমাণ পায়নি পুলিশ। এমনকি ঘটনাস্থলেও তিনি ছিলেন না।

‘পুলিশ মামলা দেয়ার পর তাকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে রিমান্ড প্রাথর্না হলেও এই আসামির কােনো রিমান্ড চাওয়া হয়নি। হয়তাে আসামির ঘটনার সঙ্গে সম্পক্ততা নেই বলেই পুলিশ এমনটি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিচারকের কাছে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে আবেদন করেছি এবং সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে।

‘এদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে আমার সাথে একাধিকবার যােগাযােগ করেছে। এ বিষয়টা তাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তাদের নাগরিকের যত সহযােগিতা দরকার তারা তা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।’

এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কে বলছে উনি ব্রিটিশ নাগরিক। উনি তো দেশেই থাকেন, দেশেই শিক্ষকতা করেন। আপনি যেহেতু জেনেছেন, আমার বিষয়টি জেনে এ বিষয়ে বলতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর