পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীর রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েলের (ইউরেনিয়াম) ষষ্ঠ চালান পৌঁছেছে।
নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হয়ে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভেতরে ঢোকে। এ সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাশিয়া থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় এসে পৌঁছায় ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালানটি।
শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে সড়কপথে এ ইউরেনিয়াম রূপপুরে নেয়া হয়।
পাকশী হাইওয়ে পুলিশের ওসি (ভারপ্রাপ্ত) আশিস কুমার স্যানাল জানান, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম চালানের মতো কঠোর নিরাপত্তায় ইউরেনিয়ামবাহী ষষ্ঠ চালানের গাড়িবহর প্রকল্পে আসে।
ওসি আশিস বলেন, ইউরেনিয়ামবাহী গাড়িগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কে সকাল পৌনে ৮টা থেকে পৌনে ৯টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ইউরেনিয়াম রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে পৌঁছানোর পর ওই রুটের বিভিন্ন সড়কে ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকায় আসার পর ২৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছায়। ৫ অক্টোবর প্রথম চালানটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ৬ অক্টোবর ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান, ১৩ অক্টোবর তৃতীয়, ২০ অক্টোবর,চতুর্থ চালান ২৭ অক্টোবর ৫ম চালান রূপপুরে পৌঁছায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর জানান, ইউরেনিয়ামের আরও একটি চালান দেশে আসবে। মোট সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
জানা গেছে, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে, তা চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া তিন বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। প্রতিদিন জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) এবং পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পরপর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে। ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মত, ২০২৪ সালের মার্চে প্রথম ইউনিটে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। পরের বছর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দু’টি ইউনিটে মোট ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
বাংলাদেশ সরকার ও রাশান ফেডারেশনের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।