বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে সারা দেশ থেকে ২৫৬৩ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩৪৩৬ জনের বেশি নেতা-কর্মীর নামে ৫৫টিরও বেশি মামলা হয়েছে। হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে এক সাংবাদিকসহ মোট নয়জন নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪২৮৩ জনের অধিক নেতাকর্মী, যাদের বিরুদ্ধে ৮০টির অধিক মিথ্যা মামলা হয়েছে হয়েছে বলে দাবি তার।
বুধবার বিকেলে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তারকৃত সব নেতা-কর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
রিজভী বলেন, ‘অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও দেশের নানা জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ, আবার কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ যুক্তভাবে এই ঠাণ্ডালীগ অবরোধকারী গণতন্ত্রের ফেরানোর দাবির পক্ষে স্লোগান দেয়া নেতা-কর্মীদের ওপরে আক্রমণ চালিয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে নির্বিচারে, পাইকারিভাবে; ব্লক রেইড চলছে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়। রিমান্ড আর গ্রেপ্তার এ যেন আওয়ামী দুঃশাসনের অন্যতম পণ্য।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার গোটা দেশকে বিএনপিশূন্য করা, বিরোধী দলশূন্য করার, এমনকি গণতন্ত্রশূন্য করার জন্য যত ধরনের পদ্ধতি দরকার সেটি করে যাচ্ছে। ওরা মরিয়া হয়ে এই কাজ করে যাচ্ছে।
‘বিএনপিসহ বিরোধী দলকে স্তব্ধ করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেড় দশকের আওয়ামী লুণ্ঠন ও অর্থপাচারের কাহিনীগুলো যেন সাধারণ জনগণ জানতে না পারে।’
রিজভী বলেন, ‘দেশব্যাপী যে জুলুম-নিপীড়নের খড়্গ নেমে এসেছে গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর, যারা বাকস্বাধীনতা চায়, যারা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে চায়, যারা গণতাধিকার অধিকার ফিরে পেতে চায়… আজকে তারা মরণপণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী ‘রাজপথ-রেলপথ-নৌপথ অবরোধ’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে দলের নেতা-কর্মীদের ওপরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণ, হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরেন রিজভী।