বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরীক্ষা স্থগিতের পর মাস পার, ‘অনিশ্চয়তায়’ শিক্ষার্থীরা

  • নুর নওশাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি    
  • ১ নভেম্বর, ২০২৩ ১১:১২

উপাচার্যকে দেয়া চিঠিতে শিক্ষার্থীরা লিখেন, ‘মাস্টার্সের পরীক্ষা গত ২১ আগস্ট শুরু হয় এবং চলতি মাসের চার তারিখ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে ছয়টি কোর্সের পরীক্ষা বাকি থাকতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিভাগের সভাপতি এক নোটিশে পরীক্ষার স্থগিতাদেশ দেন। এই সিদ্ধান্ত আমাদের বিব্রত করেছে। এই নোটিশের পর আমরা লিখিত ও মৌখিকভাবে অন্তত ২০ বার সভাপতি ও সকল শিক্ষকের কাছে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করেছি। ইতোমধ্যে এক মাস ২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি, যা আমাদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের ৫০৯ নম্বর কোর্সের পরীক্ষার আগের দিন এক শিক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যু হয়। শোকাহত সহপাঠীর প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে মাস্টার্সের বাকি শিক্ষার্থীরা পরদিন ওই কোর্সের পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানান।

ওই দাবি না মানায় পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। ফলে ওই দিনের (১৪ সেপ্টেম্বর) পরীক্ষাটিসহ পরবর্তী পরীক্ষাগুলো অনিবার্য কারণে স্থগিত ঘোষণা করে বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনার এক মাস ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও স্থগিত পরীক্ষা কখন নেয়া হবে, সে বিষয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি বিভাগ। এমন বাস্তবতায় ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার কথা উল্লেখ করে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন ভুক্তভোগী মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রক্টরের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে চিঠি দেন তারা।

উপাচার্যকে দেয়া চিঠিতে শিক্ষার্থীরা লিখেন, ‘মাস্টার্সের পরীক্ষা গত ২১ আগস্ট শুরু হয় এবং চলতি মাসের চার তারিখ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে ছয়টি কোর্সের পরীক্ষা বাকি থাকতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিভাগের সভাপতি এক নোটিশে পরীক্ষার স্থগিতাদেশ দেন। এই সিদ্ধান্ত আমাদের বিব্রত করেছে।

‘এই নোটিশের পর আমরা লিখিত ও মৌখিকভাবে অন্তত ২০ বার সভাপতি ও সকল শিক্ষকের কাছে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করেছি। ইতোমধ্যে এক মাস ২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি, যা আমাদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।’

বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ নিয়ে কথা বলেন। তাদের একজনের ভাষ্য, ‘গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে আমাদের সিআর (ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ) মারজান আক্তারের মা মারা যান। সংবাদটি শোনার পর আমাদের অনেকেই তার বাসায় যাই সমবেদনা জানাতে। পরদিন পরীক্ষা দেয়ার মতো অবস্থা মারজানের ছিল না। তাই মারজানের জন্য মানবিক দিক বিবেচনায় পরের দিন সিএজে-৫০৯ পরীক্ষাটি স্থগিত করার জন্য আমরা মুঠোফোনে বিভাগের সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং খুদেবার্তা পাঠাই। সময় স্বল্পতার কারণে বিভাগে এসে আমরা লিখিতভাবে আবেদন দিতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘পরীক্ষাটি স্থগিত না হওয়ায় আমরা সম্মিলিতভাবে ওই পরীক্ষা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই৷ আমাদের একজন সহপাঠীর জন্য আমরা এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হই৷ তাই আমরা ওই দিন (১৪ সেপ্টেম্বর) বিভাগে উপস্থিত হইনি। পরে জানলাম বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটি আমাদের ওই দিনের পরীক্ষাসহ বাকি পরীক্ষাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে৷ আমরা বারবার পরীক্ষা নেয়ার জন্য অনুরোধ করলেও বিভাগ থেকে কোনো প্রকার ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি রওশন আক্তার বলেন, ‘সহপাঠীর মা মারা যাওয়ায় তারা পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানান। এ বিষয়টি অ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপন করলে শিক্ষকরা পরীক্ষা পেছানোর এমন নজির নেই বলে মতামত দেয়। ফলে পরীক্ষা পেছানো হয়নি, কিন্তু পরীক্ষার দিন দুইজন ছাড়া কেউ আসলেন না। কিছু জানানো ছাড়া তারা কেন আসলেন না, পরের পরীক্ষাতেও আসবেন কি না, এই প্রেক্ষাপটে পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয় অ্যাকাডেমিক কমিটিতে।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নেয়ার জন্য একটি দরখাস্ত দেয়। তাদের দরখাস্ত অনুযায়ী অ্যাকাডেমিক কমিটি পরীক্ষা নেয়ার জন্য পরীক্ষা কমিটিকে উদ্যোগ নিতে সুপারিশ করে। পাশাপাশি তারা কেন এমন করল, তা বের করার জন্য একটি সত্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তিন দিনের মতো আমার সঙ্গে এসে কথা বলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে সিদ্ধান্ত জানতে তারা কেউ আমাদের কাছে আসেননি।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।

চবির প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের একটি দরখাস্ত আমি পেয়েছি। দরখাস্তটিতে সুপারিশ করে উপাচার্যের কাছে ফরোয়ার্ড করেছি। উপাচার্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর