রাজধানীর মিরপুরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে একটি পোশাক কারখানার আন্দোলনরত কর্মীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
মিরপুর ১১ নম্বরে পূরবী সিনেমা হলের কাছে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া পোশাক শ্রমিক-পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২২ জন পোশাক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের দায়িত্বরত কর্মকর্তা নাহিদ জামাল বলেন, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কারখানায় ঢুকে বিক্ষোভরত পোশাক শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে চিকিৎসা নিতে আসা শ্রমিকেরা অভিযোগ করেছেন। হামলায় আহত ১০ জনকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বিকেল সাড়ে ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। তারা মিরপুর ১১ থেকে ১০ নম্বরের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানায়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে তারা বেশ কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন। মিরপুর ১১ নম্বরে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাস্তায় নামে। পরবর্তীতে তিন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে প্রথমে স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ও মাঠে নামে। শ্রমিকরা এখন রাস্তায় আছেন।’
আন্দোলনকারীরা মিরপুর ১১ মেট্রোরেল স্টেশনের আশপাশের এলাকায় দুটি অসিম বাস ও একটি প্রজাপতি বাস ভাঙচুর করেছে। সে সময় প্রজাপতি বাসে অবস্থানরত চালক মো. আলাল আহত হন। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের ছোঁড়া ইট এসে আমার মুখে লাগে৷ আমি বেশ আঘাত পেয়েছি।’
মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দুই-একদিনের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির কথা রয়েছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে তুলে দিয়েছি। আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে হালকা হাতাহাতি হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।’