রাজধানীর পুরান ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের পুরাতন ভবনে একটি শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা চলাকালে ছাদের পলেস্তারা খসে কবি নজরুল সরকারি কলেজের তিন জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
সোমবার বিকেল পৌঁনে ৫টার দিকে সাত কলেজের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা চলাকালীন, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ৩১৪ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। আগেও বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের ইয়াসিন আরাফাত ইমন ও সোনিয়া এবং অর্থনীতি বিভাগের আনাস। তারা সবাই কলেজের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে ইমনের মাথা ফেটে যাওয়ায় তাকে ন্যাশনাল মেডিক্যালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী আবদুন নূর বলেন, ‘আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। চার ঘন্টা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে হঠাৎ ছাদের পলেস্তারা খসে ফ্যানের সঙ্গে লেগে ছিটকে গিয়ে দুজনের গায়ে লাগে এবং ইমনের মাথা লাগে। তার মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আমাদের ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলে। আমরা ইমনকে নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যালে আসার পর তার মাথা সেলাই দেয়া হয়। এছাড়াও ডাক্তার তাকে সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছে।’
ন্যাশনাল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদুল হাসান জানান, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেয়া হয়েছে। এরপরে সমস্যা হলে সিটি স্ক্যান করাতে হবে। এছাড়াও প্রতি তিনদিন পরপর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করাতে হবে।
আহত শিক্ষার্থী ইমন জানান, ‘আমি লিখছিলাম। হঠাৎ করেই গুলির মতো ইটের এক পলেস্তারা আমার মাথায় লাগে। এরপর আমি আর কিছু বলতে পারিনা। আমার মাথা ফেটে গেছে। সেলাই পড়েছে। আমি এখন চিকিৎসার জন্য এতো টাকা কোথায় পাবো। আর আমার সামনে আরও পরীক্ষা আছে এগুলোই বা দেব কীভাবে। আমি কিছুই জানি না।’
এ ব্যাপারে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোহসিন কবীর বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি কলেজেই ছিলাম। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই যে ছেলেটির মাথা ফেটেছে, আমরা তার ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করেছি। তার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।’
ঐ রুমে আবারও পরীক্ষা নেয়া হবে কিনা জনতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আর বিকল্প নেই। ভবনটি সংস্কারের জন্য আমরা বেশ কয়েকবার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। আবারও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি তাদের জানিয়েছি।’
ভবনটি ঝুকিপূর্ণ কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ভবন ঝুকিপূর্ণ না। তবে অনেকদিন হওয়ার কারণে পলেস্তার নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে যে ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে সে ভবনেই কিছুদিন পূর্বে বহু টাকা ব্যয় করে জানালার গ্রিল এবং থাই লাগানো হয়। তবে অধ্যক্ষ বলছেন, এসব কাজ কলেজ থেকে নয়, শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর করে দেয়া হয়েছে।