বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কিশোরগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, নিহত ২

  • প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ    
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:২১

নিহত রেফায়েত উল্লাহ তনয়ের চাচা আবুল কালাম বলেন, ‘রেফায়েত উল্লাহ তনয় দুই বছর আগে বিয়ে করে। তার ৬ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। সকালে বাড়ি থেকে বের হয় সে। আন্দোলনে যোগ দিলে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় সে।’ 

কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আরও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।

বিএনপির ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন মঙ্গলবার সকালে কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুলিশের গুলিতে ছয়সূতি ইউনিয়নের বড় ছয়সূতি গ্রামের ২৩ বছরের রেফায়েত উল্লাহ তনয় ও একই ইউনিয়নের মাধবদী গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী বিল্লাল হোসেন নিহত হয়েছেন।

রেফায়েত উল্লাহ তনয় উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহসভাপতি। বিল্লাল হোসেন একই ইউনিয়নের কৃষক দলের সভাপতি।

এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

নিহত রেফায়েত উল্লাহ তনয়ের চাচা আবুল কালাম বলেন, ‘রেফায়েত উল্লাহ তনয় দুই বছর আগে বিয়ে করে। তার ৬ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। সকালে বাড়ি থেকে বের হয় সে। আন্দোলনে যোগ দিলে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় সে।’

অপরদিকে গুলিবিদ্ধ বিল্লাল হোসেন রনি গুরুতর আহত হলে তাকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন। বিল্লালের মা নাজমা বেগম বলেন, ‘এলাকা থেকে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী আন্দোলনে যোগ দিতে যায়। তা দেখে বিল্লালও ঘর থেকে দৌঁড়ে বের হয়। পরে শুনতে পারি সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’

ঘটনার পর বিএনপি সমর্থকরা ছয়সূতি-কাঁঠালতলি এলাকায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি ওষুধের পিকাপ ভ্যান ভাঙচুর করে এবং রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে জানতে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেল থেকে দুজন নিহতের কথা জানানো হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছে।

কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল মিল্লাত সাংবাদিকদের জানান, আজ সকাল আটটার দিকে ছয়সূতি ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নিয়ে উপজেলার ছয়সূতি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাওয়া মাত্র আগে থেকে সেখানে অবস্থান নেয়া পুলিশ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে ২০ থেকে ২৫ জন আহত হন।

কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সকাল ৮টার দিকে হাজারেরও বেশি সংখ্যাক লোক অস্ত্রসহ ছয়সূতি এলাকায় অবরোধ সৃষ্টি করতে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে। বাধা দিতে গেলে তারা চারদিক দিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে। আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে আমরা রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করি। এ ঘটনায় থানার এ এস আই মান্নান, এ এস আই সাকিনুর, এ এস আই জুয়েল এবং আমিসহ আরও ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ দুজন নিহত ও কুলিয়ারচর থানার ওসিসহ ১৫ পুলিশ আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কুলিয়ারচরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দুস্কৃতিকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে এবং সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করে।

নিহত দুজন পুলিশের গুলিতে নাকি নিজেরাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পুলিশের ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে সেটা জানা যাবে বলে দাবি করেন তিনি।

ভৈরবে অবরোধ চলাকালে সকালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। অবরোধকারীরা রামদা, রড, লাঠিসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

পুলিশ কাদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।

এ সময় পুলিশ শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে বিএনপির অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ।

এ বিভাগের আরো খবর