বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে রণক্ষেত্র গাজীপুর, পিকআপ-কারখানায় আগুন, নিহত ১

  • প্রতিনিধি, গাজীপুর   
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ২১:৩৬

দিনভর থেমে থেমে চলা এই বিক্ষোভে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গাজীপুর। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা একটি পিকআপ ভ্যান, পুলিশ বক্স ও দুটি পোশাক কারখানায় আগুন দিয়েছে। আগুন নেভাতে গেলে ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও।

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরে সপ্তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন কল-কারখানার শ্রমিকরা। দিনভর থেমে থেমে চলা এই বিক্ষোভে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গাজীপুর। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা একটি পিকআপ ভ্যান, পুলিশ বক্স ও দুটি পোশাক কারখানায় আগুন দিয়েছে। আগুন নেভাতে গেলে ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও।

অন্যদিকে, পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। তবে পুলিশ বলছে, হার্ট অ্যাটাকে ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত শ্রমিকের নাম রাসেল হাওলাদার। ২৬ বছর বয়সী ওই যুবকক ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনাইকাঠি গ্রামের আব্দুল হান্নান হাওলাদারের ছেলে। গাজীপুরে গাছা থানাধীন মালেকের বাড়ি এলাকায় একটি মেসে ভাড়া থাকতেন তিনি।

নিহত রাসেলের সহকর্মী মো. আবু সুফিয়ান জানান, স্থানীয় ‘ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেড’ নামে একটি কারখানায় কাজ করেন তারা। কারখানাটির ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন রাসেল হাওলাদার।

স্থানীয় ৫-৬টি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। এ কারণে সকালে তাদের কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারখানা থেকে বের হয়ে তারা পায়ে হেঁটে বাসার দিকে রওনা হন। তখন কারখানার সামনে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে রাসেল বুকের ডান পাশে এবং ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হন। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তায়রুন্নেছা মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজে এবং পরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে, বিকেলে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান বলেন, তায়রুন্নেছা মেডিক্যালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাসেল হাওলাদারের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

জানা যায়, ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো সোমবার সকাল থেকে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু হয়। কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিচালা এলাকার লেগোস অ্যাপারেলস, এটিএস, বে ফুটওয়্যারসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা বেশকিছু যানবাহন ভাঙচুর করে এবং একটি পিকআপ আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

সকাল ৯টা থেকে গাজীপুর মহানগরীর ভোগরা বাইপাসের আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামে। এ সময় তারা কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মিছিল বের করলে পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তাতে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পরে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে।

আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একটি অংশ গাজীপুর মহানগরীর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগরা এলাকায় অবস্থান নিয়ে যানবাহন ভাঙচুর করতে গেলে শিল্প পুলিশ ও বাসন থানা পুলিশ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তাতে শ্রমিকেরা প্রথমে ছত্রভঙ্গ হলেও পরে আবার সংঘবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ করে ও কারখানায় ঢিল ছোড়ে।

এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকেরা মহাসড়কের কলম্বিয়া এলাকায় একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনার জেরে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

কারখানায় আগুন

এদিকে বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে দুটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনরত শ্রমিকরা। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার ফটক ভেঙ্গে উত্তেজিত শ্রমিকরা ভিতরে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আন্দোলনরত শ্রমিকরা প্রথমে যমুনা ফ্যাশনে আগুন দেয়। পরে সেটা নিয়ন্ত্রণ করলে এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় আগুন দেয়।’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি ভাংচুর করে উত্তেজিত শ্রমিকরা।’

এ বিভাগের আরো খবর