ফারমার্স ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী এবং তার ও স্ত্রী সন্তানকে মোট ২৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এর মধ্যে বাবুল চিশতীকে ১২ বছর, তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতীকে ১২ বছর এবং স্ত্রী রোজী চিশতীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি বাবা ও ছেলেকে ৩১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছে আদালত।
রায়ে আদালত বলেছে, আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ সাজা দেয়া হয়েছে।
কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের পাশাপাশি এ আইনের ৪(৩) ধারা অনুসারে আসামিদের নামীয় সকল প্রকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেছেন আদালত।
এছাড়া মামলার চার নম্বর আসামি মাসুদুর রহমান খানকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলার চার আসামিদের মধ্যে বাবুল চিশতী ছাড়া বাকি সবাই পলাতক।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
মামলা থেকে জানা যায়, ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় মামলা করে দুদক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ব্যাংকের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মাহবুবুল হক চিশতী গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদে ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা ও উত্তোলন করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন শাখার মোট ২৫টি হিসাবে নগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে মোট ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন। হিসাবগুলোতে গ্রাহকদের হিসাব থেকে পাঠানো অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করে এবং নিজেদের নামে কেনা ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।
২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাবুল চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচার শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হয়।