পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি সহিংসতার আহ্বান জানালে অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত, সে যে দেশেরই হোক না কেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা দাবি করা মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আহতদের দেখার পর রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মোমেন।
আরেফির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো- যে-ই সহিংসতার আহ্বান জানায়, তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’
আরেফি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং শনিবার তিনি বিএনপির সংবাদ সম্মেলনেও বক্তব্য দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যে দলের নেতা-কর্মীরা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেছে তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
মোমেন বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীদের ওপর এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের (হামলাকারীদের) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত, যাতে কেউ এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি করতে সাহস না পায়।’
আরেফি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বোকা নন যে এই ধরনের লোককে এখানে পাঠাবেন। আমি এটা বিশ্বাস করি না।’
‘জো বাইডেনের উপদেষ্টা’ হিসেবে পরিচয় দেয়া মিয়া আরেফিকে বিএনপি নেতারা ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
যেখানে আরেফি বিএনপি ও জামায়াতকে ‘বাংলাদেশে সরকারব্যবস্থার পরিবর্তন নিশ্চিত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমর্থনের’ আশ্বাস দেন।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, ‘দূতাবাস থেকে কোনো ব্যক্তির বিএনপির কার্যালয়ে যাওয়ার বিষয়ে যে গুজব তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুল’।
একটি ভিডিওর দিকে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, ‘এই ভদ্রলোক যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে কথা বলার মতো কেউ নন; তিনি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সঙ্গে বসে আরেফি কথা বলেছেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার সম্পূর্ণ পক্ষে।
বাইডেন ছাড়াও আরেফি স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং বাংলাদেশে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার প্রাত্যাহিক যোগাযোগের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বিরোধীদের আন্দোলনকে সমর্থন করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপি অফিসে বসে থাকা আরেফিকে দলীয় নেতারা ঘিরে রেখেছেন।