হরতালে চালু রাখার ঘোষণা দিয়েও সিলেটে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার বাস চলাচল।
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রোববার সকালে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানান, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ভয়ে চালকরা বাস নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
রাজধানীর নয়াপল্টনে শনিবারের সমাবেশে সংঘর্ষের জেরে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
এদিকে শনিবারই সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ও জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, হরতালেও বাস চালু থাকবে। যথাসময়ে টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাবে দূরপাল্লার বাস।
তবে রোববার সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। টার্মিনাল সড়ক প্রায় ফাঁকা। বাসগুলো টার্মিনালের ভেতরে দাঁড় করিয়ে রাখা। বেশিরভাগ বাস কাউন্টারও বন্ধ।
বাস চালু থাকার ঘোষণা শুনে হবিগঞ্জ যাওয়ার জন্য সকালে বাস টার্মিনালে গিয়েছেন ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা রাসেন্দ্র দাশ, কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস পাননি তিনি।
রাসেন্দ্র বলেন, ‘জরুরি কাজে আমার আজ হবিগঞ্জ যাওয়া প্রয়োজন। কাল রাতে বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখলাম আজ বাস চলাচল করবে। বাস মালিক শ্রমিকরা এমনটি বলেছেন। তাদের ঘোষণা শুনেই টার্মিনালে এসেছিলাম। কিন্তু কোনো বাস পাইনি।’
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা।
সিলেট থেকে জাফলংগামী এই বাসটি আওয়ামী লীগের এক নেতার মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
বাসের মালিক জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া মাহমুদ জানান, তার মালিকানাধীন বাস ‘আল মাহমুদ পরিবহন’ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাফলং যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। হুমায়ূন রশীদ চত্বরে যাওয়ার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা গাড়িটি ভাঙচুর করেন।
ঘোষণা দিয়েও বাস চালু না রাখা প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘বাস চালু রাখার বিষয়ে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরাও সে অনুযায়ী চালু রাখার ঘোষণা দেই, কিন্তু নাশকতার ভয়ে চালকরা বাস নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
‘এরই মধ্যে তামাবিল সড়কে দুটি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশের ভাড়া নেয়া একটি বাসও ভাঙচুর করা হয়েছে। তাই চালকরা ভয় পাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যাত্রীও নেই। টিকিট কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও কোনো যাত্রী আসেননি।’
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।