বিএনপির সকাল-সন্ধ্যার হরতালে ‘যাত্রী সংকটে’ গাইবান্ধা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রোববার ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গাইবান্ধা থেকে ঢাকাসহ দেশের কোনো প্রান্তেই কোনো বাস ছেড়ে যায়নি, তবে শহরে সাধারণ মানুষের চলাফেরা কম দেখা গেলেও জেলা শহরে অভ্যন্তরীণ যোগযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে হরতালের সমর্থনে মিছিলের প্রস্তুতির সময় গাইবান্ধা শহরের কাঁচারি বাজার থেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টিটুল, জেলা যুবদলের সেক্রেটারি রাগিব হাসান চৌধুরীসহ পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে পলাশবাড়ি স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শামীম রেজাকেও।
রোববার সকাল ১১টার দিকে গাইবান্ধা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ডে সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়েছে বাস।
বাস টার্মিনাল সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারগুলোর দুই-একটি ছাড়া সবগুলোই বন্ধ দেখা গেছে। কাউন্টারগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য যাত্রী এলেও দিনে নয়, রাতে গাড়ি চালু হওয়ার শর্তে দেয়া হচ্ছে টিকিট। যদি বাস না চলে, তবে ফেরত দেয়া হবে টিকিটের টাকা অথবা যাত্রীরা চাইলে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন যাত্রার তারিখ ও সময়।
গাইবান্ধা থেকে পলাশবাড়ি পর্যন্ত যোগাযোগের অটোরিকশাগুলো এসময় পর্যন্ত বন্ধ দেখা গেছে। ফলে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে দেখা গেছে।
গাইবান্ধা আলহামরা কাউন্টারের টিকিট মাস্টার সাজু মিয়া বলেন, ‘বিএনপির ডাকা হরতালের কারণে গাইবান্ধা থেকে রোববার ভোর থেকেই সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। বিকেলে বোঝা যাবে রাতে গাড়ি চলবে কি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার জন্য এখন যেসব যাত্রী আসছেন। আমরা তাদের ‘যদি রাতে গাড়ি চলে তাহলে গাইবান্ধা থেকেও বাস চলবে। বাস না চললে টাকা ফেরত দেয়া হবে’ এই শর্তে রাতের টিকিট দিচ্ছি।’’
জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি নাজিবুর আমিন নান্নু বলেন, ‘গাইবান্ধা থেকে সব রুটেই বাস চালু আছে। যাত্রী সংকটে কোনো বাস ছেড়ে যাইনি। আমরা বাসের স্টাফদের বাস চালু রাখতে বলেছি, যাত্রী হলেই বাস গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে যাবে।’
অন্যদিকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বিএনপির দলীয় কার্যালয় এবং জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। কিছুক্ষণ পরপর পুলিশের টহল দিতে দেখা গেছে।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সর্বসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করাসহ শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার সকালে পিকেটিং এর প্রস্তুতি নেয়ার কালে শহরের কাঁচারি বাজার থেকে বিএনপি-যুবদলের পাঁচজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বাকিরা পালিয়ে গেছে।’