তিন দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রবেশমুখ সাভারে চেকপোস্টে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। বাস, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়িসহ প্রায় সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
তল্লাশির সময় সবার পরিচয়পত্র যাচাই করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের ভাষ্য, তল্লাশির সময় আটক করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির প্রায় ৫০ জন নেতা-কর্মীকে।
এদিকে ভোর থেকেই সড়কে যানবাহন সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শনিবার ভোর থেকেই আমিনবাজার এলাকায় অস্থায়ী চেকপোস্টে পুলিশকে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে।
পুলিশ সদস্যদের ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদারের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন পরিবহনে তল্লাশি চালাতে দেখা যায়। পরিবহন থামিয়ে যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশিসহ তাদের পরিচয়পত্র দেখেন পুলিশ সদস্যরা। ওই সময় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তল্লাশি শেষে পরিবহনগুলোকে রাজধানীতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে সকাল থেকে সাভারে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যানবাহন সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। অনেককেই দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আবার হঠাৎ একটা বাসের দেখা মিললে সেটাতে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন অনেকে।
মহাখালীর শিশু হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে আশুলিয়ার নবীনগরে স্বপরিবারে বাসের জন্য অপেক্ষায় থেকেছেন মো. হাবিব ও তার স্ত্রীসহ শিশু সন্তানরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও বাস না পেয়ে বিপাকে পড়েন তারা।
হাবিব বলেন, ‘ভোর ছয়টায় উঠে নবীনগরে আসছি। ছোট বাচ্চাটার ঠান্ডাজনিত সমস্যার কারণে মহাখালী শিশু হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। এখন এসে দেখি বাস নাই। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে আছি, বাস আসে না।
‘হঠাৎ কোনো বাস এলে সেটাতে মানুষ ঠেলাঠেলি করে উঠছে। এমন অবস্থায় ছোট বাচ্চা আর স্ত্রীকে নিয়ে আমি কীভাবে উঠব? এখন হাসপাতালে যাওয়া হবে কি না, সেটাও বুঝতে পারছি না।’
ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফী বলেন, ‘রাজধানীতে আজ কাছাকাছি দুই দলের সমাবেশে থাকায় সারা দেশ থেকে কর্মীরা আসছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন মামলার আসামি।
‘কর্মীদের অনেকের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও মাদক মামলা রয়েছে। এ ছাড়া এই চেকপোস্ট থেকে ইতোপূর্বে ১০ মামলার আসামিকেও মাদকসহ আটক করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই চেকপোস্ট নিয়মিত থাকবে। তাই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের চেকপোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সাভারের আমিনবাজার, বিরুলিয়া ও আশুলিয়াতে আমাদের চেকপোস্ট কার্যক্রম চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশুলিয়া থেকে বাসের যাত্রী বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় সন্দেহভাজন অনেককে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। এটাকে আমরা আটক বলছি না, তবে সংখ্যাটা এখনই বলা সম্ভব না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তল্লাশির সময় প্রায় ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।