রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছেছে ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান।
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালানটির গাড়িবহর কঠোর নিরাপত্তাবলয়ের মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হয়ে রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পে পৌঁছায়।
ওই সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি ও রাশিয়ানরা গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে রাশিয়া থেকে পূর্ববর্তী চারটি চালানের মতো বিশেষ বিমানে ঢাকায় এসে পৌঁছে ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান। এটি শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয়।
পাকশী হাইওয়ে পুলিশের ওসি আশীষ কুমার স্যানাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ চালানের মতো কঠোর নিরাপত্তায় ইউরেনিয়ামবাহী পঞ্চম চালানের গাড়িবহরগুলো নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে।’
তিনি জানান, ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো নেয়ার সময় মহাসড়কে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তাবলয় ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কে সকাল সোয়া ৮টা থেকে সোয়া ৯টা পর্যন্ত সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল।
ইউরেনিয়াম রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে পৌঁছানোর পর ওই রুটের বিভিন্ন সড়কে ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। পরের দিন ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জ্বালানি নেয়া হয় প্রকল্প এলাকায়।
প্রথম চালানোর পর ৬ অক্টোবর সকাল সোয়া ১০টার দিকে ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান রাজধানী ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছায়। ১৩ অক্টোবর একই পথে ইউরেনিয়ামের তৃতীয় চালান ও ২০ অক্টোবর চতুর্থ চালান নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পোঁছায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বৃহৎ প্রকল্প। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের ব্যয় ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। আর রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। আর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে।
দুটি ইউনিট চালু হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।