মাস না পেরোতেই নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার গোবরচোপা-সগেরপুর সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। এ নিয়ে চরম ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা।
কয়েকদিন আগে স্থানীয় এক ব্যক্তি হাত দিয়েই কিছু কার্পেটিং তুলে ভিডিও ধারণ করেন। যা পরে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ আগে থেকেই সড়কটি সংস্কারের কাজ চলছিল। ২০ থেকে ২৫ দিন আগে নতুন করে কার্পেটিং করা হয় পুরো সড়ক। সংস্কার কাজ চলাকালে বৃষ্টিও হয়েছিল একদিন। সব মিলিয়ে স্থানীয়দের চোখে বিষয়গুলো দায়সারা মনে হওয়ায় প্রতিবাদ করেন অনেকেই। কিন্তু তাদের কথাকে তোয়াক্কা না করেই সংস্কার কাজ শেষ করে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এরপর থেকে গোবরচোপা হাট এলাকায় সড়কের বিভিন্ন যায়গায় পিচ-পাথর সরে যেতে থাকে। এসব জানার পর ঠিকাদের পক্ষ থেকে জোড়া তালি দিয়ে কার্পেটিং স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়।
গোবরচোপা হাট এলকার বাসিন্দা ছামছুর রহমান ও বেলাল হোসেন বলেন, রাস্তার কাজ মটেও মানসম্মত হয়নি। নিন্মমানের কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিহা এন্টারপ্রাইজ। কাজ শেষ হতে না হতেই রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে। পিচ উঠে যাচ্ছে। পরে এসে ঠিকাদারের লোকজন রিপেয়ার করেছে কিন্তু সেটিও খুব ভালো হয়নি বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, সংস্কার কাজে বিটুমিন, পাথরসহ অন্যান্য উপাদান ঠিক-ঠাকমত দেয়া হয়নি। চোখের দেখায় কাজ সঠিক হচ্ছে না মনে করেই প্রতিবাদ জানানো হয়। কিন্তু কিছু লোকজন এসে হুমকি দিয়ে যায়। তাই ভয়ে আর কেউ মুখ খোলে না। এসব দায়সারা কার্পেটিং তুলে ফেলে সড়কটি নতুন করে সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিহা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সাইদুজ্জামান সিফাত নিজেদের ত্রুটির কথা শিকার করে বলেন, প্রায় ২ কিলোমিটার এই সড়ক সংস্কারে বরাদ্দ আসে ৬৬ লাখ টাকা। সিডিউলে উল্লেখিত চাহিদা অনুযায়ী সব উপাদানই সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ট্যাকনিক্যাল ক্রুটির কারণে সম্ভবত এমনটা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই এটি পুনরায় সংস্কা করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এই সংস্কার কাজ দেখভাল করার দায়িত্ব ছিল স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের হাতে। জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন ভিন্ন কথা।
তার দাবি, কিছুদিন আগে বিএনপির একটি সভায় যাওয়ার সময় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে অনাকাঙ্খিত ঝামেলা হয় সংস্কার শ্রমিকদের। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই ব্যক্তিরা জেল থেকে বের হয়ে এসব সড়যন্ত্র করছেন। তারাই কার্পেটিং হাত দিয়ে তুলে ফেলে সরকারের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।