বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২৮ অক্টোবর তিন দলের সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের শঙ্কায় পুলিশ

  •    
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২৩:৪১

পুলিশ সদরদপ্তরের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার এনামুল হক সাগর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করবে, এটাই কাম্য, তবে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের নামে কোনো পক্ষ সহিংসতার আশ্রয় নিলে জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশের যা করণীয় তাই করবে।’

আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও আরেক দল জামায়াতে ইসলামী। একই দিনে শান্তি সমাবেশ ডেকেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

কাছাকাছি জায়গায় বড় এই তিন দলের সমাবেশ ঘিরে বিশৃঙ্খলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির শঙ্কার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী। যদিও এই তিন দলের পক্ষ থেকেই ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে পাঠানো আলাদা আবেদনপত্রে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ এখন নানা হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করণীয় সব কৌশলই গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

তাদের ভাষ্য, তৃণমূল থেকে রাজধানী পর্যন্ত সবখানেই গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে। এ ছাড়াও ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় সন্দেহভাজনদের গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মহাসমাবেশ আয়োজনের নেপথ্যে অন্য কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না, সেসব বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছেন র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

নিজ কার্যালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, তিনটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সব দিক নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। সব মাধ্যম থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ডিএমপির একাধিক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, বিএনপি ও জামায়াত প্রকাশ্যে এক দফা দাবির কথা ঘোষণা করলেও গোপনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিশেষ করে জামায়াতের কর্মকাণ্ড নিয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এই দিনে। তাদের নেতা-কর্মীরা সহিংস হয়ে উঠতে পারেন; সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মতো কোনো ঘটনার জন্ম দিতে পারেন। এ জন্যই একই দিনে শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ আয়োজনের কারণ খুঁজছেন তারা।

পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজধানীর প্রবেশপথগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ নানা কৌশলে এগোচ্ছে। কেউ সরাসরি রাস্তায় অবস্থান করবে। আবার কোনো কোনো পক্ষ আশপাশে অবস্থান নেয়ার পরিকল্পনা করছেন, তবে ছদ্মবেশী রাজনৈতিক কর্মীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে গোয়েন্দারা।’

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সংঘর্ষ, প্রাণহানির শঙ্কা

বিএনপি ও জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হতে পারে—এমন শঙ্কায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আগাম গোয়েন্দা প্রতিবেদন দিয়েছে সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা।

সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পুলিশ বলছে, সমাবেশের দিন ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হতে পরে। এ নিয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

‘ছাড় দেবে না’ পুলিশ

মহাসমাবেশ ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সুযোগ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক সমাবেশের নামে কোনো ধরনের সহিংসতা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে ২৮ তারিখ সমাবেশের দিন পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ১৫ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবেন। সব ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশের দাঙ্গা দমন বিভাগের সদস্যরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন। সেই সঙ্গে প্রস্তত থাকবে কাঁদানে গ্যাস, সাঁজোয়া যান, জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেডসহ অন্যান্য সরঞ্জাম।

উল্লিখিত তথ্য জানিয়ে মঙ্গলবার ডিএমপির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে তিন স্তরে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সমাবেশের আগের দিন থেকে ঢাকার প্রবেশমুখে তল্লাশি জোরদার করা হবে। প্রতিটি থানা এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে। সমাবেশস্থলের চারপাশে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আধুনিক অস্ত্র সরঞ্জাম।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের আন্দোলন জোরালো করতে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে চূড়ান্ত মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া একই দিন শান্তি সমাবেশ করবেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। দলটির ভাষ্য, আন্দোলনের নামে বিএনপির ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের’ বাধা দিতে রাজধানীর সব এলাকায় পাহারার পাশাপাশি গুলিস্তান এলাকায় মহাসমাবেশের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

তিন দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ২৮ তারিখ রাজনৈতিক সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলার সুযোগ দেয়া হবে না।

ওই দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গত সোমবার সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ওই দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক থাকে, জনজীবন যাতে ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসকদেরও এ বিষয়ে বলা হয়েছে।

বাড়ছে উত্তাপ

২৮ তারিখের মহাসমাবেশকে ঘিরে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়ে এরই মধ্যে উত্তাপ ছড়ানো হচ্ছে। বিএনপি বলছে, সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করেই তারা ঢাকার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছে। জামায়াতও মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে উত্তাপে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বলছে, মহাসমাবেশের নামে বিএনপির অন্য উদ্দেশ্য আছে। তারা নাশকতা চালাবে। মহাসমাবেশের নামে জামায়াত ঢাকায় ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের মতো বসতে চায়, তবে তাদের বসতে দেয়া হবে না।

মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যেন না হয়, সে বিষয়ে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সতর্কতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

মহাসমাবেশের নামে ঢাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বসে পড়ার চেষ্টাকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রতিহতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। সমাবেশে বিএনপি নেতাদের আগমন ঠেকাতে ঢাকার প্রবেশমুখে এরই মধ্যে তল্লাশি চৌকি বসানোর খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ডিএমপির সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যকে ছুটি না নিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

ঢাকার একাধিক ক্রাইম বিভাগের কয়েকজন উপকমিশনারের (ডিসি) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সমাবেশ ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সুযোগ দেয়া হবে না।

এ বিষয়ে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে মতিঝিল এলাকায় বিশৃঙ্খলার সুযোগ দেয়া হবে না। ২৮ তারিখের সম্ভাব্য উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তারা।

এ বিষয়ে ডিএমপির একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে মঙ্গলবার কথা বলে জানা যায়, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাঠ পর্যায়ের যেসব রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পূর্বে মামলা ছিল, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আবার জামিনে থেকে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, এমন নেতা-কর্মীদের ওপর নজরদারি চলছে। এ ছাড়া মামলায় যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। তাদের তালিকা ধরে ধরে অভিযান চলছে। এ ছাড়া আবাসিক হোটেল ও মেসে অভিযান চালানো হচ্ছে।

ডিএমপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপির মহাসমাবেশের দিন ঢাকার প্রবেশপথ গাবতলী, উত্তরার আবদুল্লাহপুর, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, শ্যামপুরের পোস্তগোলা সেতু ও পুরান ঢাকার বাবুবাজার সেতুসহ সব জায়গায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ওই দিন ডিএমপির দাঙ্গা দমন বিভাগের সদস্যদের পাশাপাশি থানা-পুলিশ ও মহানগর ডিবি মূল দায়িত্বে থাকবে। এ ছাড়া ডিএমপির বিশেষায়িত দল সোয়াটের সঙ্গে বোমা উদ্ধার ও নিস্ক্রিয়করণ দল প্রস্তুত থাকবে। ঢাকার বাইরে থেকে বিভিন্ন জেলা পুলিশও মোতায়েন করা হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের একটি দল ঢাকার অদূরে ৩০০ ফুট সংলগ্ন পুলিশ আবাসিক সোসাইটিতে (পিওএইচএস) ঢাকার প্রবেশমুখে নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে ঢাকার আশপাশের জেলারগুলোর পাশাপাশি থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ওপর নজরদারি চলছে জানিয়ে ঢাকার এসপি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা, নাশকতা, হামলা, ভাঙচুর, সড়কে অবস্থান করে যানজট সৃষ্টি করলে কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না।

যা বলছেন ডিএমপি কমিশনার

সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সোমবার ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা কর্মসূচির আড়ালে যদি কেউ সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করে রাজধানীর ২ কোটি ২৪ লাখ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি করে, তাহলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি স্বার্থন্বেষী মহল গুজব ছড়াচ্ছে। শুধু ২৮ অক্টোবর ঘিরেই নয়, অন্যান্য বিষয়েও ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা মনে করি ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ গুজবের বিরুদ্ধে সচেষ্ট থাকবে। একই সঙ্গে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

২৮ অক্টোবরের সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আরেকটা শাপলা চত্বর হতে যাচ্ছে। পরিণতি হবে শাপলার চত্বরের চেয়েও ভয়াবহ।’

এ ব্যাপারে কোনো গোয়েন্দা তথ্য আছে কি না জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, ‘আমরা নজরদারির ভেতরে রেখেছি। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। এ ব্যাপারে যেকোনো তথ্য যদি আমরা পাই, তবে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব৷’

যা বলছেন গোয়েন্দারা

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, মহাসমাবেশে অংশ নিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ এরই মধ্যে ঢাকায় ঢুকেছেন। প্রতিদিনই বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসছেন। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে দাবি করছে বিএনপি।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের তথ্য সত্য নয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামির বাইরে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। দাগি আসামি ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

যা বলছে বিএনপি

বিএনপি নেতাদের রাত্রিকালীন অবস্থান চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে বলে দাবি করছেন বিএনপি নেতারা। দলটির দাবি, সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার এক দিনেই গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির ২২৯ নেতা-কর্মীকে।

এ বিষয়ে বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার বলেন, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই থেকে অদ্যাবধি বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মোট আহত হন ১ হাজার ৯৯০ জন। ২৬ হাজার ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয় ৩৯৫টি; গ্রেপ্তার করা হয় ২ হাজার ৯৭৫ জনকে।

নজরদারিতে জামায়াত-শিবির

ডিএমপির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে জামায়াতে ইসলামী সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা তাদের। ২৮ অক্টোবর জামায়াত বিশেষ দিন হিসেবে পালন করে। এ জন্য বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। জামায়াতের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে মাঠ পুলিশকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদপ্তরের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার এনামুল হক সাগর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করবে, এটাই কাম্য, তবে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের নামে কোনো পক্ষ সহিংসতার আশ্রয় নিলে জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশের যা করণীয়, তাই করবে।’

তিনি বলেন, ‘শারদীয় দুগোর্ৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। এ জন্য পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সবোর্চ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে।

‘২৮ অক্টোবর ঘিরে যাতে কোনো নাশকতা কিংবা সহিংসতার ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়েও দেশের সব জেলা পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন ইউনিটকে দিকনির্দেশনা দেয়া আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর