বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শুধু বাঙালির জন্যই কি বাংলাদেশ, প্রশ্ন আমীর খসরুর

  • প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম   
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:১৫

আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হচ্ছে বিএনপির মূলমন্ত্র। অনেকেই এটা হৃদয়ে ধারণ করে না। হৃদয়ে ধারণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আর যারা বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের কথা বলে তারাই বৌদ্ধদের মন্দিরে আগুন লাগিয়েছে। তারা হিন্দুদের মন্দির ভাঙ্গে।’

বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের সমালোচনা করে শুধু বাঙ্গালিদের জন্যই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে কিনা আওয়ামী লীগের কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বিপক্ষে যারা আছে তারা বলে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ। শুধু যারা বাঙ্গালি তাদের জন্যই কি বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে? সমস্ত বাংলাদেশের মধ্যে যারা বসবাস করে সকলের জন্য বাংলাদেশ। সকলেই সমানভাবে রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার পাবে। এটা আমাদের ধারণ করতে হবে। এটাই হচ্ছে বিএনপির মূলমন্ত্র।’

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়িতে বিএনপির আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাঠে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্নিমা উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এই সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

আমীর খসরু বলেন, ‘ঐক্য ও সম্প্রীতির দেশ- বাংলাদেশ। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এ দেশকে রংধনু নেশনে পরিণত করতে চায়। অর্থাৎ একটি রংধনুতে যেরকম অনেকগুলো রং থাকে সে রঙের মধ্যে আমাদের ১৭ থেকে ১৮টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী যারা আছে, বাঙ্গালি যারা আছে সবাই এক একটি রঙ। সব রং মিলিয়েই রংধনু অর্থাৎ রেইনবো নেশন বাংলাদেশ।

‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ হচ্ছে বিএনপির মূলমন্ত্র। অনেকেই এটা হৃদয়ে ধারণ করে না। হৃদয়ে ধারণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আর যারা বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের কথা বলে তারাই বৌদ্ধদের মন্দিরে আগুন লাগিয়েছে। তারা হিন্দুদের মন্দির ভাঙ্গে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যারা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিশ্বাস করেন এটার মূল উৎস হচ্ছে যে যার যার ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করবে। যার যার যেই ভাষা ও ঐতিহাসিক ভূমিকা আছে, ইতিহাস আছে সেটাকে পালন করবেন। এটাই বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের একটি অংশ। এর মধ্যে সব ধর্মের মানুষ আছে, সব সম্প্রীতির মানুষ আছে, সব ইতিহাসের মানুষ আছে, সব ভাষার মানুষ আছে। সবাই মিলে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যারা বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের কথা বলে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মন্দির ভেঙ্গেছে। ২০১২ সালে রামু মন্দিরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় ছবি আছে। আমরা দেখেছি সব। এটার কোনো বিচার হয়নি। উখিয়াতে মন্দিরে আক্রমণ করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। সেটারও কোনো বিচার হয়নি। হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ করেছে কুমিল্লায়। মিথ্যা মামলা দিয়েছে অন্য মানুষের নামে, এটা করেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সুতরাং এদের থেকে যদি বাঁচতে হয় আজ সম্মিলিতভাবে আমাদের জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একটি ঐক্যবদ্ধ জায়গায় যেতে হবে।’

আমীর খসরু বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৌদ্ধদের মূল বসবাসের জায়গা। আপনাদের মধ্যে যদি ঐক্য থাকে, আপনারা যদি সমর্থন দেন আগামী দিনে যে রেইনবো নেশনের কথা বলছি সেটা করতে আমাদের অনেক সহজ হবে। সকলেই রাষ্ট্রের সমান অধিকার ভোগ করবে। আমরা চাই রাজনীতিতে উঠে আসুন আপনারা। বিএনপিতে আপনারা অংশগ্রহণ করেন। আপনারা নেতৃত্বে আসেন।

‘আপনাদেরকে কাউন্সিলর হতে হবে, চেয়ারম্যান হতে হবে, উপজেলা চেয়ারম্যান হতে হবে, এমপি ও মন্ত্রী হতে হবে। বিএনপি সেটাতে বিশ্বাস করে। জাতিকে আজ ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিস্ট সরকার থেকে আমাদের মুক্তি লাভ করতে হবে।’

প্রধান বক্তার বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আওয়ামী দুঃশাসন দেশকে গ্রাস করে ফেলেছে। বর্তমান সময়টা জাতির জন্য সবচেয়ে সংকটময়। এ সময়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা অনেক চ্যালেঞ্জের। এই চ্যালেঞ্জ উত্তরণের জন্য সকল ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আজকে প্রতিহিংসার কারণে শাসকগোষ্ঠী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় মুমূর্ষু অবস্থায় রেখেছে। বিরোধী কেউ যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেই নির্বাচনী পরিকল্পনা সরকার তৈরি করেছে। তার অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে, যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন। সব রাজনৈতিক দল এখন সরকারের পদত্যাগ চাইছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দাবি আদায় করা হবে।’

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ঝন্টু কুমার বড়ুয়ার পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, বান্দরবান জেলা বিএনপির সভাপতি মা ম্যা চিং, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ ভূইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ ধর্ম সম্পাদক দিপেন দেওয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাচিং প্রু জেরী, ব্যরিষ্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বান্দরবান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাভেদ রেজা। সম্প্রীতি সমাবেশ উদ্বোধন করেন বাবু চন্দ্রগুপ্ত বড়ুয়া।

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলাম, বৌদ্ধ ঐক্যফ্রন্টের নেতা প্রবীন চন্দ্র চাকমা, অনিমেষ চাকমা রিঙ্কু, অংজা প্রু চাকমা, প্রকৌশলী দিপু বড়ুয়া, কমল জ্যোতি বড়ুয়া, প্রীতম বড়ুয়া, সাচিং মারমা, উত্রাসিং মারমা, সুজন বড়ুয়া, বরুন বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, মোহন বড়ুয়া, সজল বড়ুয়া, জুয়েল বড়ুয়া, চয়ন বড়ুয়া, দীক্ষিত বড়ুয়া, তন্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর