উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুন কিছুটা দিক পরিবর্তন করেছে। এটি উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে এখন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে আবহাওয়ার সবশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে।
এ অবস্থায় কক্সবাজারকে ৬ নম্বর থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর এখন ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায়। অপরদিকে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দিতে বলা হয়েছে। বাকি সমুদ্রবন্দরগুলোকেও ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা দিক পরিবর্তন করায় আবহাওয়া অধিদপ্তর এই সংকেত জারি করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ ১২ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর এবং দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণঝড় হিসেবে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ২৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ২৫০ কিলেমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও পূর্ব ও উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর এবং দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির মূল অংশ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা নাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হচ্ছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
প্রবল ঘূণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।