নওগাঁয় ছোট যমুনা নদীতে নৌ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এ বছর প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে পাঁচ শতাধিক নৌকা অংশ নিতে দেখা যায়। নওগাঁ শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর বিজিবি ব্রিজ থেকে পালপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশ জুড়ে দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনের দিন এমন নৌ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় প্রতি বছর।
এই শোভাযাত্রায় নওগাঁ পৌরসভা, সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পাশ্বর্বতী বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপ থেকে আসা প্রতিমাবাহী নৌকা ছাড়াও ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় পাঁচ শতাধিক নৌকা এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে এবার।
বিকেল তিনটার পর থেকে নদীর বুকে ছুটে চলা নৌকায় ঢাকের শব্দ এবং মাইকের গানের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠে তিন কিলোমিটার এলাকা। নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে সব ধর্মের নারী-পুরুষ, শিশু, কিশোর এ দৃশ্য উপভোগ করেন।
নৌ শোভাযাত্রা শেষে সন্ধ্যায় ছোট যুমনা নদীর দহের ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। আর তার মধ্য দিয়েই শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা।
এর আগে দুপুরের পর থেকেই নওগাঁ সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পূজা মণ্ডপে দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ার পর শুরু হয় ভক্তদের সিঁদুর খেলা। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীরা একে অন্যকে রাঙিয়ে দেন সিঁদুরের লাল রঙে। চলে ছবি তোলা আর ঢাকের তালে নাচ-গান। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ছোট যমুনা নদীর দুই পাড়সহ শহরজুড়ে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
শান্তিপূর্ণভাবেই এ বছর শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। এ বছর জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ৮২৪টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবার দেবী দুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় ঘটে (ঘোড়া) চড়ে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসেন। আবার ঘটে করেই স্বামীর বাড়ি কৈলাশে ফেরেন।
সনাতন ধর্মাবলাম্বীরা বিশ্বাস করেন, ঘটে দেবী দুর্গার আসা ও যাওয়া অশুভ লক্ষণ। ঘটে করে আসার মধ্য দিয়ে দেবী অশুভ শক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য মর্তবাসীকে সর্তক করে গেলেন।