রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে তা শান্তিপূর্ণভাবে সফল করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় নেয়া এ সিদ্ধান্ত সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
দেশে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে যে তারা ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করবে। ওই মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সফল করতে সহায়তা চেয়ে ডিএমপিতে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও দলটির পক্ষে থেকে জানানো হয়েছে।
জামায়াতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে ১৫ বছর ধরে সরকার দেশে হত্যা, নৈরাজ্য, গুম, খুন, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশকে এক অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, ভোটাধিকারবিহীন, গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আর মাত্র তিন মাস পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। জামায়াতে ইসলামী একটি গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক দল হিসেবে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সব রাজনৈতিক নেতার মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকারের দাবি মেনে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বার বার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
‘কিন্তু সরকার তা অগ্রাহ্য করে অব্যাহতভাবে গণগ্রেপ্তার চালিয়ে আসছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা জাতি আজ এক দফার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। এমতাবস্থায় সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ২৮ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছে।’
শাপলা চত্বরে ঘোষিত মহাসমাবেশ সফল করতে ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে জামায়াত। একই দিনে রাজধানীর পৃথক দুটি স্থানে বিএনপি ও জামায়াতের মহাসমাবেশ আয়োজনের আবেদন প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয় ডিএমপি’র জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেনের কাছে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবেদন করার কথা আমি শুনেছি। তবে অনুমতি প্রদানের কোনো খবর শুনিনি।’
সংঘর্ষের শঙ্কা, সতর্ক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
এদিকে একই দিনে বিএনপি, জামায়াত এবং আরও কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঢাকায় জড়ো হওয়া নিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছে। আনুষ্ঠানিক অনুমতি চাওয়ার আগেই তারা ঢাকায় এসেছে। অনুমতি প্রদান করার পর তারা বড় ধরনের জমায়েত করে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করতে পারে।
এই আশঙ্কা থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সব কর্মকর্তা ও সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
বিএনপি ও জামায়াতের একই দিনে মহাসমাবেশ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও সহিংসতার শঙ্কার কথা জানিয়েছে। তারাও যেকোনো মূল্যে রাজপথের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে দলীয়ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা।