সৌদি যাওয়া হলো না মো. রাসেলের। তাকে নিয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন মিশে গেল কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ট্রেন দুর্ঘটনায়।
সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরবের জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় যাত্রীবাহী এগারসিন্দুর ট্রেনকে ধাক্কা দেয় একটি মালবাহী ট্রেন। এই দুর্ঘটনায় ২০ জনের প্রাণহানির সঙ্গে অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন।
ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের একজন ২২ বছর বয়সী রাসেল। মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ভরা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান হাবিবের ছেলে তিনি।
গার্মেন্টসে চাকরি করে আর বাবার গরু বিক্রি করে টাকা জমিয়ে বড় আশা নিয়ে সৌদি পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন এই যুবক। তবে মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে গেল তার।
নিহত রাসেলের চাচা মো. জাকারিয়া ভূইয়া নিউজবাংলাকে জানান, ভরা গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবিবের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে রাসেল সবার বড়। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে পাড়ি জমান তিনি।
তিনি জানান, ২০১৮ সালে রামপুরার একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন রাসেল। পরিবারের সদস্যরা গার্মেন্টসে চাকরিকরে ও গ্রামে থাকা সর্বশেষ সম্বল গরুটি বিক্রি করে টাকা ব্যবস্থা করেছিল রাসেলের জন্য।
জাকারিয়া ভূইয়া আরও জানান, রাসেল কিছুদিন আগে গ্রামে এসেছিল স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিতে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টায় তার ফ্লাইট ছিল। এজন্য বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন এগারোসিন্ধুর ট্রেনে।
তিনি জানান, রাসেলের বাবা একজন হতদরিদ্র মানুষ। ছেলেকে বিদেশে পাঠানোটা তার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে সে স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল! কথা ছিল ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর, এখন ছেলের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাকে।