পুড়ে যাওয়া মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের নির্মাণ কাজ আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজার (কৃষি মার্কেট) পরিদর্শন শেষে সোমবার দুপুরে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হোন সেজন্য আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ করে দোকান ফিরিয়ে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটাতেই আমরা এসেছি। আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এই কৃষি মার্কেটে পূর্বের নকশা অনুযায়ী নির্মাণকাজ শুরু হবে। এরপর যার যেখানে দোকান ছিল, যতটুকু জায়গা ছিল সে অনুযায়ীই আপনারা দোকান বরাদ্দ পাবেন। আপাতত আপনাদের ব্যবসা যেন বন্ধ না থাকে, আপনারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হোন, সেজন্যই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।
‘তবে আমরা পরে এখানে পরিকল্পিত বহুতল ভবন মার্কেট নির্মাণ করব। তখন নোটিশ দিলে মার্কেট নির্মাণের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। নতুন বহুতল মার্কেট নির্মাণ হওয়ার পর আপনারাও অবশ্যই এখানে দোকান বরাদ্দ পাবেন। এটি নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। উন্নত বাংলাদেশে আমরা জরাজীর্ণ কৃষি মার্কেট চাই না। এখানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হবে৷ এই মার্কেটে সিনেপ্লেক্স থাকবে, শিশুদের খেলার জায়গা থাকবে।
‘মাল্টিপারপাস শপিং মল নির্মাণ করা হবে। মার্কেটে সবধরনের কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন করা হবে। নিরাপত্তার জন্য বসানো হবে ফায়ার হাইড্রেন্ট। মার্কেট কমিটিকে অনুরোধ করছি একটি ফায়ার ফাইটিং টিম গঠন করবেন। অগ্নিকান্ড ঘটলে যেন প্রাথমিকভাবে তারা পদক্ষেপ নিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের দিন আমি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। সেখান থেকে সার্বক্ষণিক খোজ নিয়েছি। আমার সিইওসহ সকল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিখিয়েছে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে। সুসময়ে মানুষের পাশে না দাঁড়ালেও চলে। কিন্তু বিপদে অবশ্যই পাশে দাঁড়ানো জরুরী।’
এ সময় মেয়র আতিকুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য এক কোটি টাকা আর্থিক সহায়তার এবং মার্কেট নির্মাণের জন্য তিন কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন।
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মীরা মানুষের বিপদে কখনো ঘরে বসে থাকে না। শেখ হাসিনার কর্মীরা অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো বিপদে মানুষের জন্য ঝাপিয়ে পরেন। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে, শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মেয়র মহোদয় সমাধান করে দিবেন। ব্যবসায়ী ভাইদের একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’
উল্লেখ্য, সভা চলাকালীন মোবাইল ফোনে সংযুক্ত হয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি মার্কেট নির্মাণের জন্য ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন।
মতবিনিময় সভায় আরও অংশগ্রহণ করেন ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাদেক খান, ডিএনসিসির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজার (কৃষি মার্কেট) ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সলিমউল্লাহ সলুসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা।