সংসদের চলতি অধিবেশনেই ‘নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার’ বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির পদক্ষেপ গ্রহণে আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার এক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে বিশৃঙ্খলা এড়াতে সরকারকে এ পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘আজ (রোববার) সংসদ অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগ) এই সংসদকে ব্যবহার করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের বিধান আনতে পারে এবং এই সংসদে পাস করে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। এভাবে তারা এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে, যা আমরা করেছি (১৯৯৬ সালে)।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানাই এই সংসদ অধিবেশনে সংবিধানে এই ব্যবস্থা (নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার) চালুর জন্য। যদি তাদের মধ্যে দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম সম্মান থাকে তাহলে তারা এই পদক্ষেপ নেবে।’
অন্যথায় দেশে ইতোমধ্যে যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য সম্পূর্ণভাবে সরকার দায়ী থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার চায় না বিরোধী দল নির্বাচনে আসুক এবং দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্রের আড়ালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
‘ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে ক্ষমতাসীন দলটি দেশে আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তা বাস্তবায়নে বিরোধী দল বিএনপিই সবচেয়ে বড় বাধা।’
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল যাতে নির্বাচনে প্রার্থী দিতে না পারে সেজন্য সরকার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করছে। এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। তারা (সরকার) নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের উল্লেখ করে সরকারের নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘রাজধানীতে বিএনপির ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের ১২ হাজার ৩৭০ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৪৭টি ভুয়া মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৫৬০ জনেরও বেশি লোককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ঢাকায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিচার বিভাগে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে সব মামলায় সাক্ষী আনতে হবে এবং সব মামলায় আসামির সাজা নিশ্চিত করতে হবে।
‘তার (প্রধানমন্ত্রীর) বক্তব্য পুরোপুরি প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করছে এবং আদেশ জারি করছে।’