দুর্নীতির মামলায় কোনো ব্যক্তির যদি দুই বছর কিংবা তার বেশি সাজা হয়, তাহলে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
রোববার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক রায়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণ দেয়।
বিএনপির ৫ নেতার সাজা স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেয়া রায়ের লিখিত বর্ণনায় এ মন্তব্য করেছে আদালত।
৪৪ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত বলেছে, আপিল আবেদনকারীদের জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তাদের সাজা স্থগিত করা মোটেও ঠিক হবে না। সংবিধান অনুসারে দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সংসদ নির্বাচনে তারা অযোগ্য হবেন।
সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে আপিলকারীদের সাজা স্থগিত করার কোনো সুযোগ নেই বলেও উল্লেখ করেছে আদালত। এ সময় আদালত সংবিধানে ৬৬ (২) (ঘ) এর বিধান তুলে ধরে। যেখানে বলা হয়েছে, তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে; তাহলে তিনি নির্বাচনের বা সংসদ পদ থাকিবার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হলে আপিল বিভাগে তা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানই এখানে প্রাধান্য পাবে।
দুদকের এ আইনজীবী বলেন, দুর্নীতি মামলার সাজা স্থগিত চেয়ে বিএনপির পাঁচ নেতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানি নিয়ে তাদের আবেদন খারিজ করেছেন। ফলে তাদের সেই সাজা বহাল রয়েছে।
আদালতে আমান উল্লাহ আমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করীম ও খায়রুল আলম চৌধুরী।
এ ছাড়া ওয়াদুদ ভূঁইয়া ও আব্দুল ওহাবের পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম এবং মশিউর রহমানের পক্ষে ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক শুনানি করেছিলেন।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।