কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিকল্পিত খনন বন্ধ ও ভাঙন প্রতিরোধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার রৌমারী ফেরিঘাটে ও রৌমারী উপজেলা চত্বরে এলাকাবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
এ সময় এলাকাবাসীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাহ আলম, শামছউদ্দিন, ফজলুল হক, রুহুল আমিন, নুরআলম, মমিনুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ও আমিনা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এদিকে ব্রহ্মপুত্রে বিআইডব্লিউটির ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীতে ফেরি চলাচলের জন্য অপরিকল্পিতভাবে চ্যানেল খননের বালু নদীর কিনার থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে ফেলে। এতে পানির মূল স্রোতধারা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নদের পানি কিনারা ঘেঁষে প্রবল স্রোত ধারণ করে নদীর বামতীরে নদীভাঙন শুরু হয়। এক সপ্তাহে ড্রেজার মেশিনের কারণে তিনটি বসত ঘর, বাদামখেত, সুপারির বাগান, ধানখেত ও বিভিন্ন ধরনের ফসলের খেতসহ ১০ একর জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে নিঃস্ব হয়েছে পাঁচটি পরিবার।
অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে রৌমারী ফেরিঘাটসহ উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের উত্তর ফলুয়ারচর, পালেরচর গোয়ালেরচর, পশ্চিম খনজনমারা, বাইশপাড়াসহ আটটি গ্রাম।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত বিআইডব্লিউটির ড্রেজার মেশিন সরিয়ে নিয়ে নদীর মূল স্রোতে বসিয়ে নদীতে খনন করার।
ফলুয়ারচর গ্রামের সমরর্থ ভানু বলেন, ‘কয়েক দিনের মাথায় আমার বাড়ির অর্ধেক নদীতে ভেঙে গেছে। আমি সহায়সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। বাচ্চাদের নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। আমরা রিলিফ চাই না, এ নদীভাঙন বন্ধ হোক তাই চাই।’
একই গ্রামের শাহ আলম বলেন, ‘আমার ঘরবাড়ি ও গাছপালা সব নদীতে ভেঙে গেছে। নিজের জায়গা না থাকায় নদীর পাশেই ছাপড়া তুলে কোনোমতো ঠাঁই করে আছি। সরকারের কাছে দাবি, আমাগোর এই নদীটা যেন তারাতারি বেঁধে দেয়।’
সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ‘রৌমারী ফেরিঘাট থেকে উত্তর পার্শ্বে ৫০০ গজ পর্যন্ত নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এখনই ভাঙন রোধ করা না হলে রৌমারী ফেরিঘাটসহ আটটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদের পুনর্বাসন করা জরুরি।’
কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘বন্দবেড় ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনরোধে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। আপাতত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।’
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসন খান বলেন, ‘আমি স্মারকলিপি পেয়েছি। এ বিষয়ে নিয়ে পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’