বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নওগাঁয় চালু হয়নি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্টের শঙ্কা

  •    
  • ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০৮:৫৩

প্ল্যান্টটির ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ওপরের অংশে জমে থাকা পানিতে মৃত মুরগী ও পরিত্যাক্ত ওয়ান টাইম প্লেট পড়ে আছে। ভেতরের বিভিন্ন অংশে শ্যাওলা ধরেছে। আবার কোথাও জন্ম নিয়েছে কচুরিপানা।

বিশুদ্ধ পানির জন্য নওগাঁ পৌরবাসীর কষ্ট দীর্ঘদিনের। সংকট নিরসনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জেলায় একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হয়, কিন্তু শহরের বয়েজহোম পাড়ায় নির্মিত প্ল্যান্টট এখনও চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এতে ওই প্ল্যান্টে অকেজো হয়ে পড়া থাকা মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

প্ল্যান্টটির ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ওপরের অংশে জমে থাকা পানিতে মৃত মুরগী ও পরিত্যাক্ত ওয়ান টাইম প্লেট পড়ে আছে। ভেতরের বিভিন্ন অংশে শ্যাওলা ধরেছে। আবার কোথাও জন্ম নিয়েছে কচুরিপানা।

পৌর কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, পানি শোধনের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি অত্যাধুনিক, যেটি দেশের ৩৭টি জেলায় প্রথম পর্যায়ে চালু করা হয়। এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পানি পরিশোধন করা হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পানিতে থাকা আয়রন ও আর্সেনিকের পরিমাণ জানা যাবে। সেই সঙ্গে জানা যাবে কত লিটার পানি সরবরাহ হয়েছে আর কত লিটার জমা আছে।

পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, নওগাঁ পৌর এলকায় বিশুদ্ধ পানির খুবই অভাব। দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস পাচ্ছেন তারা, কিন্তু কার্যত তা বাস্তবায়ন হয় না।

নওগাঁ শহরের বয়েজহোম পাড়ার বাসিন্দা একরামুল হক বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল হলেই সাপ্লাই পানির প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু পানিতে আয়রনের পরিমাণ এত বেশি যে পানির রং গাঢ় লাল হয়ে থাকে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় প্রতিনিয়তই পানি বিল পরিশোধ করলেও বিশুদ্ধ পানির সুবিধা একেবারেই পাচ্ছি না আমরা। এ নিয়ে পৌরসভায় বারবার জানানো হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।’

শহরের মাস্টারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা শিল্পী বানু বলেন, ‘পৌরসভার সরবরাহ করা পানি একদমই নোংরা। খাবার তো দূরের কথা, রান্না কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করারও উপযোগী নয় এই পানি। শিশুদের জন্য এই পানি আরও ভয়ংকর।’

উকিলপাড়া মহল্লার রাকিব হোসেন বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু কী কারণে এখনও চালু করা যাচ্ছে না? প্রকল্পের টাকা কেউ পকেটে ভরেছে কি না তাও খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।’

গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে, যেখানে সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরীক্ষামূলকভাবে ছোট পরিসরে তার কার্যকারিতাও যাচাই করা হয়।

জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর প্রাক্কলনিক এমরান হোসেন বলেন, ‘অনেক আগেই পৌর কর্তৃপক্ষকে ওই প্ল্যান্টটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে, কিন্তু তারা কেন এখনও চালু করতে পারেনি, তা বোধগম্য নয়।

‘এটি এভাবে দিনের পর দিন পড়ে থাকলে মূল্যবান যন্ত্রাংশগুলো কার্যক্ষমতা হারাবে। কিছু কিছু যন্ত্র আছে যেগুলো নষ্টও হয়ে যেতে পারে। তাই কোনো সীমাবদ্ধতা থাকলে তা মিটিয়ে চালু করতে হবে।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুল হক সনি বলেন, ‘নওগাঁ পৌর এলাকায় যেসব পাইপ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়, সেগুলো সবই পুরাতন। কিছু কিছু পাইপ নষ্টও হয়ে গেছে। সুতরাং এসব পরিবর্তন না করা পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’

‘প্রকল্পের শুরুতেই কেন এসব পুরাতন পাইপের বিষয়টি সামনে অনেননি? তবে কি অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল?’

উল্লিখিত প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি পৌর মেয়র।

এ বিভাগের আরো খবর