বাগেরহাটে হযরত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘিতে থাকা ‘মাদ্রাজি’ নামে পরিচিত ( খাদেমরা এ নামে ডাকে) পুরুষ কুমিরটি মারা গেছে।
মাজারের দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ ও খাদেমসহ দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন দিঘীর ঘাটে।
সন্ধ্যায় দিঘির উত্তর পাড়ে মৃত কুমিরটিকে তোলা হয়। কুমিরটির মৃত্যুর কারণ জানতে ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কুমিরটি প্রায় তিন বছর আগে দুইবার অসুস্থ হয়। তখন দিঘী থেকে উঠিয়ে কুমিরটিকে ১৫ দিন চিকিৎসা দেয়া হয়েছিলো। সে সময় নিউরোলজিকাল ও নার্ভে কিছু সমস্যা ধরা পরলেও চিকিৎসায় কুমিরটি প্রায় সুস্থ্ হয়ে গিয়েছিলো। আমরা প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছি ওই অসুস্থতার কারণেই কুমিরটির মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত করা হলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
কুমিরটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছেন মাজারের খাদেমরা। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যেই কুমিরটিকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
খ্রিষ্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে নিজের শাসনামলে হযরত খানজাহান (র.) মিঠা পানি সংরক্ষণের জন্য ‘খাঞ্জেলি’ দিঘিতে ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দুটি কুমির ছাড়েন। সেই থেকে কুমির এই মাজারের ঐতিহ্য।
এখানকার কুমির দেখতে দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শণার্থী আসেন বাগেরহাটে। ২০১৫ সালে ৫ ফেব্রয়ারী ঐতিহ্যবাহী হয়রত খান জাহান (র.) এর মাজারের দিঘির শতবর্ষী কুমিরের শেষ বংশধর ‘ধলা পাহাড়’ মারা যায়। এরপর ভারতের চেন্নাই (সাবেক মাদ্রাজ) ক্রোকোডাইল ব্যাংক থেকে দুটি কুমির এনে ছাড়া হয় মাজারে।