আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘জনগণের সঙ্গে দলটির কোনো সম্পর্ক নেই।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বৃহস্পতিবার সকালে এক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
‘গণতন্ত্র রক্ষা ও এক দফা দাবি আদায়ে মরহুম সাইফুদ্দিন মনির ভূমিকা’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে জাতীয়বাদী সমমনা জোট। এতে সভাপতিত্ব করেন এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা নির্বাচনের আগে মানুষকে সুন্দর সুন্দর কথা বলেন, আর তাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়ে যায়। দুর্ভাগ্য যে নির্বাচনের পর ওই মানুষগুলো গান গায়- আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় উঠতাম না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক গতকাল বুধবার বিশেষ বার্তা দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেই নির্বাচনে তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আসবেন। সেটাই যদি মনে করেন যে তিনি নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তাহলে তো আর নির্বাচনের প্রয়োজনই নেই। সেটাই তারা চাচ্ছে। কিন্তু এটা তো জনগণের কথা নয়।’
দেশে কখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না- ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘তাহলে এটা নিয়ে ১৭৩ দিন কেন হরতাল করেছিলেন? এতোগুলো মানুষকে কেন হত্যা করেছিলেন? একটাই উদ্দেশ্য- ক্ষমতায় যাওয়া।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এসেও আমাদেরকে চিন্তা করতে হয় যে এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এমনকি পাকিস্তানও একটা সিস্টেম তৈরি করে ফেলেছে সেখানে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। নেপাল, মালদ্বীপ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ফেলেছে। এখন প্রশ্ন- আমরা কেন পারছি না? কারণ একটাই, আওয়ামী লীগ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের দলের (বিএনপি) নেতা-মন্ত্রীরা প্রথমদিকে বলেছিলেন- না, এটা আমরা মানবো না। তারপর মেনে নিয়েছেন। কেন নিয়েছেন? খালেদা জিয়া জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে মেনে নিয়েছেন। যেহেতু সংসদের ম্যান্ডেট লাগবে সে কারণে নির্বাচন করে এক রাতের মধ্যে সেই আইন পাস করা হয়েছে। কেন? জনগণের স্বার্থে।'
তিনি আরও বলেন, ‘আজ যেহেতু আওয়ামী লীগ জানে যে সুষ্ঠু ভোট হলে, জনগণ ভোট দিতে পারলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তাই তারা সংবিধানকে অবৈধভাবে কেটে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে।
‘এখন যে সংবিধান আছে তা বর্তমান সংসদ নির্বাচনের সময় তো থাকবেই, নির্বাচনের পর নতুন সংসদ না হওয়া পর্যন্ত থাকবে। অর্থাৎ তারা (আওয়ামী লীগ) থাকবেই।’
বিএনপি সচেতনভাবে এখনও সংঘাতমূলক কর্মসূচি দেয়নি উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আশা করছি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা পদত্যাগ করবে। নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে। দেশকে সংকটের হাত থেকে রক্ষা করবে। এটা শুধু আমরা চাই তা নয়, বিদেশিরাও চায়। এটা খুব পরিষ্কার যে আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই।’