বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঠাঁই নেই শিশু ওয়ার্ডে, রোগীরা বারান্দায়

  • প্রতিনিধি, ফেনী    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ ১৬:২৩

আরএমও ডা. আসিফ ইকবাল বলেন, ‘ওয়ার্ডে শয্যা আছে মাত্র ২৬টি। তবে রোগী ভর্তি থাকে একশ র বেশি। হাসপাতালে রোগী আসলে ফিরিয়ে দেয়ার যেহেতু সুযোগ নেই, তারপরও আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। অপর্যাপ্ত চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চালাচ্ছি আমরা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো সুফল মিলছে না।’

ফেনীতে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত এক সপ্তাহে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার ৫ গুণ অতিরিক্ত রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে হয়েছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

এ ব্যাপারে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল জানান, শিশু ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ছিল ১৩৫ জন। রোগীর তুলনায় শিশু চিকিৎসক অপ্রতুল। মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীর চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এর মধ্যে হাসপাতালের স্ক্যানু বিভাগও চালু রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে। তবে শিশু রোগীদের নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিশু চিকিৎসকের সংকট মেটানোর কথা বললেও কোনো সুফল পাচ্ছি না।’

বৃহস্পতিবার হাসপাতালের শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডের ভেতর জায়গা না হওয়ায় অনেক শিশু রোগীদের নিয়ে হাসপাতালের বারান্দার মেঝে ঠাঁই নিয়েছেন অভিভাবকরা। ওয়ার্ডের ভেতর রাউন্ডে থাকা ডাক্তারের সেবা নিতে রোগীর স্বজনরা শিশুদের কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

রোগীর স্বজনরা অভিযোগ, হাসপাতালের বারান্দায় কোনোরকম বিছানা পেতে থাকলেও সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না তারা।

এক শিশু রোগীর অভিভাবক রহিমা বলেন, ‘ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসে ফ্লোরে থাকতে হচ্ছে শিশুদের। ফলে সুস্থ হওয়ার বদলে আরও বেশি সংক্রমিত হচ্ছে বাচ্চাগুলো।’

রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই এটা কোনোভাবেই মানা যায় না। সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালে তাদের কাটাতে হচ্ছে দিনের পর দিন। ওয়ার্ডের ভেতর এতো রোগী কিন্তু ডাক্তার আসেন এক বা দুই জন। ডাক্তাররা অনেকসময় রোগীর সমস্যা ভালোভাবে বুঝতেও পারেন না বলে দাবি তাদের।

হাসপাতালের শিশু বিভাগে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স শ্যামলী রাণী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। এত রোগীর চাপ সামাল দেয়া আমাদের পক্ষে কষ্টকর। কাঙ্খিত সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবুও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমরা।’

আরএমও ডা. আসিফ ইকবাল জানান, শিশুদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, জ্বর-সর্দিসহ নানা রোগে আক্রান্ত। এখন আবার নতুন করে হ্যান্ড ফুড এন্ড মাউথ নামে নতুন আরেকটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

হাসপাতালে রোগীদের শতভাগ সেবা নিশ্চিতে চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. মো. আসিফ ইকবাল।

তিনি বলেন, ‘২৫০ শয্যার হাসপাতাল পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক এখানে নেই। চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রায়ই সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে যে পরিমাণ শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে সে তুলনায় আমাদের চিকিৎসক নেই। ফলে মাত্র তিন জন চিকিৎসককে অধিক চাপ সামলে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।’

আরএমও আরও বলেন, ‘ওয়ার্ডে শয্যা আছে মাত্র ২৬টি। তবে রোগী ভর্তি থাকে একশোর বেশি। হাসপাতালে রোগী আসলে ফিরিয়ে দেয়ার যেহেতু সুযোগ নেই, তারপরও আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। অপর্যাপ্ত চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চালাচ্ছি আমরা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো সুফল মিলছে না।’

এ বিভাগের আরো খবর