বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমরা পুরো প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি, সাজ-সরঞ্জাম প্রস্তুত করেছি। নির্বাচনকে ঘিরে আমরা দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদ চালান রোধে আমরা সর্বোচ্চ কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত হচ্ছে ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। পেট্রোলিংয়েল টাইমে টহলে একটু ফাঁকা পেলেই মাদক চোরাকারবারীরা এই সুযোগকে কাজে লাগায়। স্থানীয়রা জড়িত না থাকলে, মাদকের সরবরাহ অনেকাংশে কমে যাবে।’
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে কুমিল্লা ১০ ব্যাটালিয়নের বিজিবি চূড়ান্ত ফায়ারিং প্রতিযোগিতা ও মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়রা তাদের সন্তানকে বর্ডারে না পাঠিয়ে স্কুলে পাঠালে তারা মাদকের সঙ্গে নিজেকে জড়াবে না। এ বছর আমরা ১১১ কেজি ক্রিস্টাল আইস জব্দ করেছি। এটা বিজিবির জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমরা শুধু বাইরে থেকে আসা মাদকই নয়, দেশেও উৎপাদন কার্যক্রমকেও রোধ করছি। আমরা শতভাগ ধরতে না পারলেও, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
তিনি এ সময় জানান, গেল এক বছর ধরে বিভিন্ন অভিযানে অন্তত ১৭ কোটি টাকার মাদক জব্দ করে ধ্বংস করা হয়।
কুমিল্লার ক্ষুদ্রাস্ত্র ফায়ারিং রেঞ্জে ‘বিজিবি ফায়ারিং প্রতিযোগিতা-২০২৩’ অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে বিজিবির মহাপরিচালকের উপস্থিতিতে কুমিল্লা সীমান্তে এক বছরের (বাজারমূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা) জব্দকৃত ৩৬ হাজার ২৩৬ বোতল ফেন্সিডিল, ৬ হাজার ৯৩৮ কেজি গাঁজা, ৬৬ হাজার ৭৭০ বোতল বিদেশি মদ, ৪ হাজার ৭০২ ক্যান বিয়ার, ৭৩ হাজার ১৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৫ হাজার ১৩ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৩২ হাজার ৩৫৮ পিস বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট এবং ১ লাখ ১ হাজার ৮৯২ পিস টার্গেট ও সেনেগ্রা ট্যাবলেট মাদক ধ্বংস করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান, রিজিয়ন কমান্ডর সরাইলের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, কুমিল্লা ব্যাটেলিয়ন ১০ এর কর্নেল শরিফুল ইসলাম মেরাজ, অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান, কুমিল্লা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইমরুল হাসানসহ প্রমুখ। এ ছাড়া বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরাইল রিজিয়ন কমান্ডার, কুমিল্লা সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের সকল কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে উপস্থিত সকলকে অনুপ্রাণিত করতে বিজিবি মহাপরিচালক নিজেই ফায়ারিংয়ের মাধ্যমে নিপুণ লক্ষ্যভেদ করে অস্ত্র চালনার ব্যাপারে তার পারদর্শিতা প্রদর্শন করেন।