দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে রয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিস। ফলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।
১৪ জন কর্মকর্তার জায়গায় অফিসে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ছয় জন। উপজেলা সমাজসেবা অফিসারসহ গুরুত্বপূর্ণ আটটি পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ওই অফিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবাপ্রার্থীরা।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, অফিসের বিভিন্ন পদে ১৪ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৬ জন এবং দীর্ঘদিন যাবত শূন্য রয়েছে ৮টি পদ।
দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ কার্যক্রমসহ বেশ কয়েকটি কার্যক্রম সম্পাদন করতে হয়। জনবল সংকটের কারণে অনেকটা ধীরগতিতেই চলছে এসব কার্যক্রম।
এ অফিসে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নেই। কমলগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোহেব হোসেন চৌধুরী। সহকারী সমাজসেবা অফিসারের পদটি শূন্য রয়েছে গত কয়েক বছর ধরে। এ ছাড়াও শূন্য রয়েছে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের ১টি পদ, ইউনিয়ন সমাজকর্মীর ১টি পদ ও কারিগরি প্রশিক্ষকের ২টি পদ। মেসেঞ্জারের ১টি পদ, নৈশ প্রহরীর ১টি পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় প্রতিনিয়ত অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
জনবল সংকটের কারণে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়। বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি, ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমসহ সরকারের নানা সেবায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভাতাভোগী ও ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সমাজসেবা অফিসের লোকবল সংকট থাকায় সঠিকভাবে অনেক কাজের পরামর্শ পান না তারা। অফিসে আসলে সময়মত লোকজনকেও পাওয়া যায় না।
সমাজসেবা অফিস একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। এখানে বিভিন্ন ভাতার জন্য এলাকার লোকজন আসেন। অফিসে অনেক সময় লোকজন পাওয়া যায়নি বলে তারা অভিযোগ করেন। ফলে এলাকার দরিদ্র ও হত দরিদ্র মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। অফিস কর্মকর্তারা লোকবল সংকটের কারণেই এমন দুর্ভোগ বলে জানান।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোহেব হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে সমাজসেবা অফিসের কার্যক্রম অনেকটা ধীর গতিতে চলছে। সহকারি সমাজসেবা অফিসারসহ ৮টি পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। ১৪ জন লোকবলের জায়গায় এ অফিসে কাজ করছেন মাত্র ছয় জন।
‘এতে যথাসময়ে গ্রাহকদের সেবা দেয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। ফলে অফিসের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মরতদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘শূন্য পদ পূরণের কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেবাপ্রার্থীদের দ্রুত সেবা দিতে গিয়ে কর্মরতদের অতিরিক্ত কাজও করতে হচ্ছে।’
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান লোকবল সংকটের বিষয় বলেন, ‘শুধু কমলগঞ্জ উপজেলায় লোকবল সংকট নয়। পুরা জেলার উপজেলাগুলোতে জনবল সংকট আছে। তবে কমলগঞ্জ কার্যালয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা। এ বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। আশা করি অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে, কাউকে ভোগান্তি পেতে হবে না।’