বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অধ্যক্ষের দাবি অপহরণ হয়েছিলেন, এমপি বলছেন ‘ডেকে চা-মিষ্টি খাইয়েছি’

  • প্রতিবেদক, রাজশাহী   
  • ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:০১

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসা অধ্যক্ষ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এটি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। যাচাই বাছাই শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে এমপির বাড়িতে আটকে রাখার অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে বিবরণ দিয়েছেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ এস. কে. এ. ডি. এস দারুস সুন্নাহ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান।

অধ্যক্ষর দাবি, তাকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে গিয়ে সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান মাদ্রাসায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু তার ইচ্ছামতো নিয়োগ ও গর্ভনিং বডি করতে হবে বলে শাসিয়েছেন।

সোমবার রাতে হাবিবুর রহমান পুঠিয়া থানায় এই অভিযোগ জমা দেন। ৭ জনকে আসামি করে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় সংসদ সদস্যকে আসামি করা না হলেও তার ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ।

মাদ্রাসা অধ্যক্ষ তার বিবরণীতে দাবি করে বলেন, ‘গত ১৪ অক্টোবর দুপুরে রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মনসুর রহমান আমার মোবাইলে ফোন করে রাতের মধ্যেই আমাকে তার সঙ্গে দেখা করার হুকুম করেন। আমি ঐ সময় আমার গ্রামের বাড়ী পাবনার দাপুনিয়া গ্রামে ছিলাম। আমি পাবনায় থাকায় দেখা করতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ঘাড় ধরে তুলে নেয়ার হুমকি দেন তিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত সোমবার আমি মাদ্রাসায় অবস্থানকালে পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ এলাকার মাইনুল ইসলাম (মোহিন) কান্দ্রা এলাকার শরিফুল ইসলাম শরিফ, বিড়ালদহ মাজার এলাকার তুষার, পলাশবাড়ীর রহমান, মাইপাড়ার হুমায়ন ওরফে হুমা, খুটিপাড়ার বাবলু রহমান, নয়াপাড়ার কামাল হোসেন মাইক্রো বাস নিয়ে আমার মাদ্রাসায় সশস্ত্রভাবে অনুপ্রবেশ করে। তারা মাদ্রাসার মূল দরজায় মাইক্রোবাসটি রেখে পিস্তল, চাকু, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড নিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দেন ও ত্রাস সৃষ্টি করে আমার অফিসেই আমাকে ঘিরে ধরেন। আমি এই সবের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন- সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান সাহেবের হুকুম আপনাকে তুলে নিয়ে যেতে হবে।

‘যদি কেউ বাধা প্রদান করে তবে তার লাশ ফেলে দেয়া হবে। তারপরেও আমি প্রতিরোধ সৃষ্টি করলে আসামিরা আমার মাথায় পিস্তল ঠেকায় এবং তারা আমার স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের সামনে শারিরীকভাবে আমাকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় মাদ্রাসার প্রভাষক ইশতিয়াক আহমেদ (ইংরেজি বিভাগ) ও অফিস পিয়ন আজিজুল হক আমাকে রক্ষা করতে আসলে আসামিরা তাদেরকে মারধর করে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং হুমকি দেন।

তিনি জানান, অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে কিল, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারতে মারতে অপহরণের উদ্দেশে মাইক্রোবাসে তুলে প্রথমে তার ব্যবহৃত ফোনটি কেড়ে নেন। এরপরে জ্ঞান হারালে, জ্ঞান ফেরার পরে তিনি দেখতে পারেন সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমানের বাড়ীতে তাকে রাখা হয়েছে।

আটক রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে ডা. মনসুর রহমান জানায়, মাদ্রাসার কোনো নিয়মনিতির তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র তার ইচ্ছামতো নিয়োগ ও গর্ভনিং বডি তৈরি করতে হবে। অন্যথায় তিনি যেকোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এমতবস্থায় প্রতিষ্ঠানের সকল স্টাফ ও ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে পুঠিয়া থানা পুলিশ সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমানের বাসা হতে অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে মাদ্রাসায় ফেরত দিয়ে যান।

তিনি আরও জানান, তার কাছে সংসদ সদস্য কর্তৃক হুমকির অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান দাবি করেন, অপহরণের তথ্যটি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষককে কয়েকদিন থেকে বলে আসছি আমার সঙ্গে দেখা করতে। ওই মাদরাসার কমিটি নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা চলছে। কমিটির সভাপতি ছিলেন প্রফেসর নওশাদ, তাকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে সভাপতি করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা চলতেছিল। আমি উনাকে বার বার বলছি আপনি আমার কাছে আসেন এবং আমি আপনাকে কী বলি একটু শুনে যান। কিন্তু আসে নাই। সে আজকে আসছিল। পরে তার সঙ্গে কথা হলো।

‘আমি তাকে বললাম, কমিটি করে লাভ কী আপনার? আপনার বেতনগুলো স্বাক্ষর হলেই তো হলো। আপনার টেনশনের কোনো কারণ নাই। আমি সমঝোতা করে দিয়েছি। অধ্যক্ষ আমার এখান থেকে মিষ্টি ও চা খেয়ে বিদায় হয়েছে। এটা অপরহণ নয়। অপরহণ করা হয়নি। তিনি ইচ্ছেমত চলে গেছেন।’

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসা অধ্যক্ষ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এটি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। যাচাই বাছাই শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর